বাংলাদেশের প্রযুক্তি জায়ান্ট ও সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটন আবারও অর্জন করল আন্তর্জাতিক সাফল্য। এবার মালদ্বীপে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাতের অনুমোদন পেল ওয়ালটন ক্যাবলস।
মালে ইউটিলিটি রেগুলেটরি অথরিটি (URA) সম্প্রতি ওয়ালটন ক্যাবলসকে দেশটির মেইন পাওয়ার সাপ্লাই ও ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে ওয়ালটনের ক্যাবলস রপ্তানি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। ফলে ওয়ালটনের রপ্তানি তালিকায় যুক্ত হলো আরেকটি পণ্য—ক্যাবলস।
ওয়ালটন দেশের ভেতরে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নতমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে নিরাপদ এবং উচ্চমানসম্পন্ন ক্যাবলস তৈরি করছে। দেশীয় বাজারে ব্যাপক সাফল্যের পর এখন তারা আন্তর্জাতিক বাজারেও নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে।
ওয়ালটন ক্যাবলসের প্রোডাক্ট ম্যানেজার হাসিবুল হক জানান, মালদ্বীপে ক্যাবলস বাজারজাত পূর্বে দেশটির ইউটিলিটি রেগুলেটরি অথরিটির নিকট থেকে অনুমতি পত্র নিতে হয়। বাজারজাতকৃত ক্যাবলসের গুনগতমান কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক মানদন্ড পূরণ করলেই সংস্থাটি অনুমোদন প্রদান করে। এরই প্রেক্ষিতে সংস্থাটির নিকট মালদ্বীপের মেইন পাওয়ার সাপ্লাই এবং ডিস্ট্রিবিউশনে ওয়ালটন ক্যাবলস ব্যবহারের অনুমতিপত্র প্রদানের আবদেন করে দেশটিতে নিযুক্ত ওয়ালটনের পরিবেশক ‘রানফাউন প্রাইভেট লিমিটেড’। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে ওয়ালটন ক্যাবলসের আন্তর্জাতিক মানদন্ড পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালে ইউটিলিটি রেগুলেটরি অথরিটি। ওয়ালটন ক্যাবলসের গুনগতমান আন্তর্জাতিক মানদন্ড পূরণ করায় সংস্থাটি রানফাউন’কে ওয়ালটন ক্যাবলস বাজারজাতের অনুমতি পত্র প্রদান করেছে। যার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ওয়ালটন ক্যাবলসের দুইটি শিপমেন্ট মালে পাঠানো হয়েছে। আরো কয়েকটি শিপমেন্ট পাঠানোর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ওয়ালটন ক্যাবলসের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) রাজু আহমেদ বলেন, মালদ্বীপ একটি ছোট দেশ হলেও দেশটির মাথাপিছু আয় অনেক বেশি। পর্যটকদের কাছেও অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য মালদ্বীপ। দেশটিতে ক্যাবলসের প্রায় ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার রয়েছে। প্রতিবছর চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে এই বাজারও বড় হচ্ছে। ওয়ালটন নিরাপদ ও উন্নতমানের ক্যাবলস সরবরাহের মাধ্যমে দেশটির সম্ভাবনাময় এই বাজারে দ্রুত শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি জানান, ওয়ালটন দেশে হাউজহোল্ড, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, কমিউনিকেশন, টেইলরমেইডসহ সকল ধরনের ক্যাবলস উৎপাদন ও বাজারজাত করছে। নিরাপদ ও উন্নতমানের হওয়ায় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটন ক্যাবলসের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারে চলতি অর্থবছরে ওয়ালটনের উল্লেখযোগ্য অঙ্কের ক্যাবলস বিক্রি হয়েছে। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি ওয়ালটন ক্যাবলসের রপ্তানিও দ্রুত বাড়ছে। যার প্রেক্ষিতে মালদ্বীপের পর শিগগিরই আরও ৪টি নতুন দেশে ওয়ালটন ক্যাবলসের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণ করা হবে।
ওয়ালটন বর্তমানে দেশে হাউজহোল্ড, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, কমিউনিকেশন ও টেইলরমেইড—সব ধরনের ক্যাবলস উৎপাদন করছে। নিরাপদ ও উন্নত মানের কারণে স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
চলতি অর্থবছরে দেশীয় বাজারে বিপুল পরিমাণ ক্যাবলস বিক্রি হয়েছে, পাশাপাশি রপ্তানিও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মালদ্বীপের পর ওয়ালটন আরও ৪টি নতুন দেশে ক্যাবলস রপ্তানির পরিকল্পনা করছে।
মালদ্বীপে ইতোমধ্যে ওয়ালটনের এয়ার কন্ডিশনার রপ্তানি হয়েছে। খুব শিগগিরই সেখানে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, ওয়াশিং মেশিনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে।
ওয়ালটনের লক্ষ্য—বিশ্বের শীর্ষ গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডগুলোর একটি হওয়া এবং বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব হাই-টেক উৎপাদন হাবে পরিণত করা।
বর্তমানে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার ৫০টিরও বেশি দেশে চলছে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড ব্যবসা, এবং আগামীতে ১০০টিরও বেশি দেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
