সাউথ ব্লক সূত্রের বক্তব্য, ইউনূসকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিতর্ক তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে মৌলবাদী ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে তাঁর সংযোগ নিয়ে। আনন্দবাজার প্রতিবেদনে আগ বাড়িয়ে বলা হয়েছে যে ইসলামপন্থী দলের উত্থান ভবিষ্যতে সামাজিক সংঘাত বাড়িয়ে তুলতে পারে। হাসিনার শাসনামলে এধরনের সামাজিক সংঘাতের নজির দেখেছে বাংলাদেশ এবং হাসিনাকে ক্ষমতায় বসাতে দিল্লি থেকে ঢাকায় উড়ে এসিছিলেন সুজাতা সিং তা বাংলেদেশেদের অজানা নয়। বরং ভারতীয় মিডিয়াগুলো গত দেড় দশকে হাসিনার স্বৈরাচারী মনোভাবের চুলচেরা বিশ্লেষণে মনোযোগী হলে উপকার পেত বন্ধু প্রতিবেশী বাংলাদেশ। 

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে উপস্থিত থাকবেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতারা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ওই সময় থাকবেন নিউ ইয়র্কেই। উভয় রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা এখনও পর্যন্ত কম। কিন্তু হতে পারে কূটনৈতিক পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। তার আগে মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলি নিয়ে গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করল সাউথ ব্লক সূত্র। এধরনের শঙ্কার কথা রটিয়ে বরং আনন্দবাজার দুই বন্ধু দেশের নেতাদের মধ্যে বিভাজন তৈরিতে ভূমিকা পালন করছে। 

একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাংলাদেশের মানুষ কখনো মেনে নেয়নি। কিন্তু আনন্দবাজারের দাওয়াই হচ্ছে হাসিনার মত স্বৈরাচারী শাসনা ব্যবস্থার দিক থেকে যেনো বাংলাদেশের মানুষের নজর না ফিরে যায়। তাই আনন্দবাজারের বয়ান হচ্ছে, সাউথ ব্লক সূত্রের বক্তব্য, ইউনূসকে ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু বিতর্ক তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে মৌলবাদী ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে তাঁর সংযোগ নিয়ে। চরমপন্থী গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের সঙ্গে ইউনূস সাক্ষাত করেছিলেন সম্প্রতি, যা উদ্বেগ তৈরি করেছে। জল্পনা শুরু হয়েছে, বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইউনূস মৌলবাদীদের আশ্রয় দিচ্ছেন কি না তা নিয়ে। নয়াদিল্লির অনুমান, ইউনূস হয়তো রাজনৈতিক পরিসরে হেফাজতের প্রভাবকে বৈধতা দিচ্ছেন। এর ফলে মৌলবাদী উপাদানগুলি আরও সাহসী হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তাদের আরও বৃহত্তর কণ্ঠস্বর হাসিল করতে পারে।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, জামায়াতে ও হেফাজতে ইসলাম যদি রাজনৈতিক সুবিধা পায়, তা হলে বাংলাদেশে শিক্ষা, লিঙ্গ নীতি এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলনে পরিবর্তন আসতে পারে, যা সামাজিক সংঘাত বাড়িয়ে তুলবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং ধর্মনিরপেক্ষ কর্মীরা আরও বিপন্ন বোধ করবে।

আজ একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অবশ্য বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বলেছেন, সেটি বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। দু’দেশের মানুষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে।”

news