জীবনের জয়গান! মারণ রোগকে তুড়ি মেরে বিয়ের পিঁড়িতে HIV পজিটিভ যুগল

 মেয়েটির কেউ ছিল না। তার পরিবার ফেলে রেখে গিয়েছিল রাস্তায়। কিন্তু মা-বাবা তার শরীরে ছড়িয়েছে মারণ রোগ। সে ভালবেসে ফেলল এমন একজনকে, যার শরীরেও বাসা বেঁধেছে সেই এক মারণ রোগই। তাই তারা দু’জনই একসঙ্গে ভাসল প্রেমের জোয়ারে। সেই জোয়ার প্রেমের নৌকাকে প্রেম দিবসের (Valentine’s Day) আগেই পৌঁছে দিল কূলে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অফার’ রবিবারই চার হাত এক করছে দুই তরুণ-তরুণীর। পরিণয় সূত্রে যারা বাঁধা পড়ছে, তারা দু’জনই এইচআইভি পজিটিভ (HIV Positive)। কিন্তু তা ভুলে গিয়ে দু’জনে একসঙ্গে নেমেছে বাঁচার সংগ্রামে।

মেয়েটিকে মা-বাবা ফেলে চলে গিয়েছিল। রাস্তায় পড়ে ছিল মেয়েটি। তার আর কোথাও যাওয়ার ছিল না। সূত্র মারফত খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অফার’ মেয়েটিকে খুঁজে পায়। ‘অফার’-এর সদস‌্যরা কন‌্যাটিকে নিয়ে আসেন তাঁদের আশ্রমে। তার মেডিক‌্যাল পরীক্ষা করতে গিয়েই জানা যায় যে, সে এইচআইভি পজিটিভ। কিন্তু এইচআইভি পজিটিভ থাকা মানেই এডস নয়। আশ্রমের সতীর্থরাও কখনও মেয়েটিকে বুঝতে দেননি যে, তার শরীরে কোনও রোগ বাসা বেঁধে আছে। বরং মেয়েটি যাতে অন‌্যান‌্য পাঁচজনের মতোই সাধারণ জীবনযাপন করে, তার ব‌্যবস্থাই নিল ‘অফার’। সে কাজ পেল একটি কফি শপে। সেখানেই অন‌্যান‌্যদের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করল সে। কর্মসূত্রেই তার সঙ্গে আলাপ হল এক তরুণের।

উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই তরুণ আগেই জানতে পেরেছিলেন যে, তাঁর শরীরেও বাধা বেঁধেছে ওই একই মারণ রোগ। তাই কোনও কিছুই দু’জনের ভাল লাগা ও ভালবাসায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। দু’জনই চ‌্যালেঞ্জ নেন, সেই মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একসঙ্গে টিকে থাকবেন তাঁরা। কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না। তা জানতে পারেন ‘অফার’-এর কর্মকর্তারা। তাই তাঁরাই চার হাত এক করার পরিকল্পনা করেন। শুধু অপেক্ষা ছিল, কবে ১৮ বছর পূর্ণ হবে ওই তরুণীর।

মেয়েটি তারুণ্যে পা দেওয়ার পরই দু’জনকে নতুন জীবনের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সলজ্জ ভঙ্গিতে দু’জনই জানান, তাঁরা বিয়েতে রাজি। তরুণের অভিভাবকরাও মেয়েটিকে নিজেদের পুত্রবধূ করতে রাজি আছেন বলেই জানান। আজ, রবিবার সন্ধ‌্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের একটি হলে মালাবদল করে বিয়ে হবে দু’জনের।
সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২৩/একে

news