এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর, ২০২৫, ১১:১১ পিএম

ছোট ও বড় পর্দার পরিচিত মুখ অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ। ক্যামেরার পেছনেও কিছু কাজ করেছেন তিনি। তবে বর্তমানে অভিনয় থেকে কিছুটা দূরে রয়েছেন এই অভিনেত্রী। আপাতত স্বামী-সন্তান নিয়েই কাটছে তাঁর বেশিরভাগ সময়। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি দারুণ সরব।
সম্প্রতি প্রসূন আজাদ তাঁর ভক্ত-অনুরাগীদের সঙ্গে দশ বছর আগের শুটিং সেটের একটি ঘটনা শেয়ার করেছেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন প্রয়াত গুণী পরিচালক আমজাদ হোসেন।
"ডিরেক্টর সোহেল আরমান সাহেবের নাটকের শুটিং চলছিল। তিনি ছিলেন খুবই খুঁতখুঁতে ডিরেক্টর। যা চাইতেন, তা না হলে ক্যামেরা চালু থাকত। শট শেষ হলো। এটি ছিল একটি কঠিন দৃশ্য। এক টেকেই আমাকে সংলাপ বলতে হবে, কাঁদতে হবে, এবং নির্ধারিত জোন ত্যাগ করে চলে যেতে হবে। আমি সবই করলাম। লাইট পরিবর্তন করতে কিছু সময় লাগছিল।"
পরের ঘটনা বর্ণনা করে প্রসূন আজাদ বলেন, "আমি অন্য কোনো ঘরে গিয়ে বসার জায়গা খুঁজছি। হঠাৎ দেখি আমজাদ হোসেন স্যার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছেন।"
তিনি অনুমান করেন, "দূর থেকে যা অনুমান করলাম, কিছুক্ষণ আগের যে দৃশ্যটায় আমি অভিনয় করেছি, সেটা দেখেই তিনি কাঁদছেন। অথচ আমি, যে কিনা নিজেই সেই দৃশ্যে অভিনয় করেছি, আবার ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যেই সেটা ভুলে নিজের মতো করে অন্য স্থান পরিবর্তন করেছি। কিন্তু তিনি (আমজাদ হোসেন) নড়তে পারেননি। তিনি তখনো সেই দৃশ্যেই আছেন।"
আমজাদ হোসেনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রসূন আজাদ বলেন, "শিল্পী খুবই মহৎ একটি শব্দ। যেটা আমার সঙ্গে যায় না। অন্তত তাঁকে (আমজাদ স্যার) দেখে আমার নিজের প্রতি এটাই ধারণা জন্মেছে।"
প্রসূন জানান, আমজাদ হোসেন স্যার তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, "এত কম বয়সে তুই কিছুই শিখিস নাই, কি করে পারিস এত সুন্দর অভিনয় করতে!"
কথাটা শুনে প্রসূনের বুক কেঁপে উঠেছিল। উত্তরে তিনি বলেন, "আমি যখন ছোট ছিলাম এবং দাদা বাড়ির উঠানে ধুলা-বালিতে খেলতাম, তখন আপনার সিনেমা 'ভাত দে' দেখছিলাম। তাই পারি..."
প্রসূন মনে করেন, সব প্রজন্ম সবকিছু ধারণ করবে না। তাঁর ভাষায়, "সব প্রজন্ম সব ধারণ করবে না। সব আবেগ সবাই বহন করতে পারবে না। এসব মেনে নিয়েই জীবনটা যাপন করতে হবে। আশা-প্রত্যাশা এসবকিছুর জন্য একটা দেশের বোদ্ধারা স্তম্ভের মতো কাজ করে।"
প্রসূন আজাদ ২০১২ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আগেই গিয়াসউদ্দিন সেলিমের 'অবগুণ্ঠন' নাটকে অভিনয় করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি এই পরিচালকের সঙ্গে ক্যামেরার পেছনেও কাজ করেন এবং 'মনপুরা' চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন।
যদিও মডেলিং ও অভিনয়ে বেশি সময় দিয়েছেন প্রসূন। শফিকুল ইসলাম খানের 'অচেনা হৃদয়' তাঁর অভিষেক চলচ্চিত্র। পরবর্তীতে তিনি 'সর্বনাশা ইয়াবা', 'মুসাফির' ও 'পদ্মপুরাণ' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।