‘উঠন্তি মুলো পত্তনেই চেনা যায়’—প্রবাদটা অনেকের ক্ষেত্রে মানানসই হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে আজকের ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যায় না। কারণ, উদ্বোধনী জুটিতে ১৭৬ রান করার পরেও বাংলাদেশ ৩০০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারল না। সিরিজ নির্ধারণী এই ম্যাচে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৯৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের দল।

বাংলাদেশের আজকের ইনিংসের শুরুটা দেখে অবশ্য বোঝার উপায় ছিল না যে, এই মিরপুরেই প্রথম দুই ওয়ানডেতে রান তুলতে ব্যাটাররা হাঁসফাঁস করেছেন। কেননা পুরো পঞ্চাশ ওভার ব্যাটিং করেও আগের দুই ম্যাচে কোনোমতে দুই শ রান পার করেছিল স্বাগতিকরা। আর আজ উদ্বোধনী জুটিতেই ১৭৬ রান তোলেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান।

ওপেনিং জুটিতে রেকর্ড গড়ল বাংলাদেশ

এটি মিরপুরে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির সর্বোচ্চ সংগ্রহ।

আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৫০ রান, যা ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ইমরুল কায়েস ও এনামুল হক বিজয়।

প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও এটি বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড। আগের জুটিতেও সৌম্য ছিলেন, ২০১৯ সালের ডাবলিনে ১৪৪ রানের সেই জুটিতে তার সঙ্গী ছিলেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

সবমিলিয়ে এটি ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৯২ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ও লিটন দাস।

আজ সুযোগ ছিল দ্বিতীয়বারের মতো উদ্বোধনী জুটিতে ২০০ রান করার। তবে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সাইফ ৮০ রানে আউট হওয়ায় তা আর হয়নি। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে ফিফটির ইনিংসটি তিনি সমান ৬টি চার ও ৬টি ছক্কা দিয়ে সাজিয়েছেন।

সৌম্যরও শতক না পাওয়ার আক্ষেপ

সাইফের মতো আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন সৌম্যও। কেননা তারও তিন অঙ্ক স্পর্শ করা হয়নি। ২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারসেরা ১৬৯ রানের ইনিংস খেলার পর আজ চতুর্থ শতক পাওয়ার খুব কাছাকাছি ছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। কিন্তু আকিল হোসেনের বলে তিনিও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন। এতে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৯১ রানের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রানের চাকা সচল রাখতে পারেননি বাংলাদেশের অন্য ব্যাটাররা। সৌম্য যখন ফেরেন, তখন দলীয় স্কোর ছিল ২৮.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৮১ রান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের ইনিংস ৩০০ ছোঁয়নি। ৮ উইকেটে ২৯৬ রানে থেমেছে। এই সংগ্রহটাও হতো না যদি নুরুল হাসান সোহান (১৬)* ও অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ (১৭) দুটি পনেরো-ঊর্ধ্ব ইনিংস না খেলতেন। মাঝে নাজমুল হোসেন শান্ত করেছেন ৪৪ রানের ইনিংস।

মাঝে মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারানোয় এই শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। শুরুর মতো শেষটা করতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ ১৩১ বলে মাত্র ১১৫ রান নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন আকিল হোসেন।

 

news