সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী দলকে সংবর্ধনা দেবে বসুন্ধরা

বাংলাদেশকে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতিয়ে নেপাল থেকে দেশে ফিরেছেন সাবিনাবাহিনী। ফাইনালে নেপালের বিরুদ্ধে খেলা ১৪ ফুটবলারের ১৩ জনই ক্লাব পর্যায়ে খেলেন বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব ক্লাব বসুন্ধরা কিংস দলে। শিরোপা জয় করা বাঘিনীদের এবার সংবর্ধনা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। 

১৯ বছর পর কোনো জাতীয় দলের চ্যাম্পিয়নের ট্রফির দেখা মিলল। সাফ অঞ্চলের বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছেন সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া, স্বপ্নারা। ফাইনালে নেপালকে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। পুরুষ জাতীয় দল সাফ ফুটবলে একবারই ট্রফি জিতেছিল, ২০০৩ সালে, অপরাজিতভাবে।

তবু মেয়েদের শিরোপাকে ফুটবল ইতিহাসে বাংলাদেশের সেরা অর্জন বলা যায়।

এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ পাঁচ ম্যাচে কোনো পয়েন্ট হারায়নি। ২৩ গোল দিলেও খেয়েছে মাত্র একটি। দুই হ্যাটট্রিকসহ টুর্নামেন্টে ৮ গোল দিয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। গোল্ডেন বুট ও টুর্নামেন্টসেরা পুরস্কারও জিতেছেন তিনি। সেরা গোলরক্ষক হয়েছেন বাংলাদেশের রুপনা চাকমা।

দেশের ফুটবলে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন সাবিনারা। তাঁদের অভূতপূর্ব সাফল্যে দেশ আনন্দে ভাসছে। মেয়েদের সাফল্য তো হুট করে আসেনি।

এর পেছনে পরিকল্পনা, পরিশ্রম ও সুযোগ-সুবিধা কাজে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাফুফের অবদান অবশ্যই আছে। কিন্তু বসুন্ধরা গ্রুপের অবদানও কম নয়। বরং এমন গতিশীল জাতীয় দল গড়ার পেছনে বসুন্ধরাই বড় ভূমিকা রেখেছে।

নারী ফুটবল মূলত বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে সীমাবদ্ধ ছিল। জাতীয় দল তো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগই পায় না। ২০১৬ সালে সাফের পর মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে এই যা। নারী মূল জাতীয় দল গড়তে মূলত সহায়তা করেছে বসুন্ধরা গ্রুপই। তাদেরই নিজস্ব ক্লাব বসুন্ধরা কিংস নারী লিগে আসার পরই মেয়েরা নতুন প্রাণ পান।

এ ব্যাপারে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, আসলে আমরা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের প্রচেষ্টায় নারী দলের ভেতর সমন্বয় আনতে পেরেছি। চেয়ারম্যান স্যার খেলাধুলা কতটা ভালোবাসেন তা কারো অজানা নয়।

ফুটবলকে জাগাতে তিনি যে পরিকল্পনা করেন তা মেনেই আমরা কাজ করি। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরও আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। 

ইমরুল বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা যেমন পুরুষ ফুটবলে বসুন্ধরা কিংস গড়েছি, তেমনি তাঁরই নির্দেশে নারী লিগে নাম লেখাই। তিনি বলতেন মেয়েদের মাঠে রাখতে হবে। হঠাৎ করে দু-একটি ম্যাচ খেলবে তাতে কোনো উন্নয়ন ঘটবে না।

তাঁর কথার গুরুত্ব দিয়ে বসুন্ধরা কিংস নারী লিগে অংশ নিচ্ছে। শুধু শিরোপা নয়, আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন। ইমরুল বলেন, বসুন্ধরা কিংসের রোডম্যাপ মেয়েদের কিছুটা হলেও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। দেখেন, এবার সাফ জাতীয় দলে ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জনই বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড়।

আর ফাইনালে সেরা একাদশে খেলা ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনই ছিলেন কিংসের। এই খেলোয়াড়দের আমরা বড় অর্থের পারিশ্রমিক, উন্নতমানের ট্রেনিং, সুযোগ-সুবিধা সবই দিচ্ছি। অনুপ্রেরণা জোগাতে অর্থ বড় একটা ফ্যাক্টর। দুশ্চিন্তামুক্ত থাকলে নির্ভার হয়ে খেলা যায়।

বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা কিংস এর সবই দিয়েছে এবং দেবে। তাই গর্বের সঙ্গে বলতে পারি বাংলাদেশের শিরোপা জয়ের পেছনে বসুন্ধরা কিংস ভূমিকা রেখেছে

কিংসের সভাপতি বলেন, চেয়ারম্যান স্যার বিশ্বাস করেন মেয়েরা তাদের সাফল্য অব্যাহত রাখবে। ফুটবলে আরো উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাতে বসুন্ধরা গ্রুপ নারী সাফজয়ী মেয়েদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেবে। আগামী মাসে হবে এ অনুষ্ঠান।

যেখানে উপস্থিত থাকবেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এর আগে আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিয়েছে।

নারী ফুটবল উন্নয়নে বসুন্ধরা গ্রুপ কাজ করছে এবং করে যাবে। এখন অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সবার প্রচেষ্টায় যেন আমরা বড় স্বপ্ন দেখতে পারি।

news