ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযান, এক মুহূর্তের জন্যও থামা যাবে না: খামেনেয়ী

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেছেন, আল্লাহর রহমতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী শক্তি ও দৃঢ়তার ক্ষেত্রে নিজেদের উত্তম অবস্থান এবং গোটা ইরানি জাতির প্রশংসনীয় ভাবমর্যাদা গোটা বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানি জাতির ইচ্ছা শক্তির বাস্তবায়নের প্রমাণ ফুটে উঠেছে। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডাররা রোববার দুপুরে সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইসরায়েলে অভিযান গোটা বিশ্ববাসী বিশেষকরে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মনে ইরানের বিশাল অবস্থান ও মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি বলেন, কয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং এর মধ্যে কয়টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে তা মুখ্য বিষয় নয়। যদিও আমাদের প্রতিপক্ষ সেই বিষয়টির ওপর জোর দিচ্ছে। মুখ্য বিষয় হলো, ইরানি জাতি ও সশস্ত্র বাহিনীর ইচ্ছা শক্তির বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের প্রতিপক্ষ এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকাণ্ডে সুষ্ঠু চিন্তা ও পরিকল্পনার প্রভাব লক্ষণীয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নানা ঘটনাতেই ব্যয় ও অর্জনের বিষয়টি থাকে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পরিকল্পনার মাধ্যমে খরচ কমাতে পারা এবং সাফল্যের পাল্লাকে ভারী করতে সক্ষম হওয়া। সশস্ত্র বাহিনী সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে এর প্রমাণ দিয়েছে।

খামেনেয়ী শত্রুদের মোকাবেলা করার জন্য উদ্ভাবন এবং নবপ্রযুক্তি ব্যবহারের ধারা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ ক্ষেত্রে এক মুহূর্তের জন্য থামা যাবে না। কারণ থেমে যাওয়া মানে পেছনে যাওয়া, কাজেই অস্ত্র, কৌশল ও পদ্ধতি এবং শত্রুদের প্রক্রিয়াগুলো চেনা-জানার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী শক্তি ব্যবহারকে সবসময়ই কর্মসূচিতে রাখতে হবে।

বিশ্বে ইরানি জাতির মর্যাদা সমুন্নত রাখার ওপর জোর দিয়ে তিনি আরো বলেন- প্রতিভাবান, কর্মক্ষম ও সৃজনশীলদের চিহ্নিত করার কাজ সুচারুভাবে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সর্বশক্তিমান আল্লাহর বিষয়ে আশাবাদী হতে হবে, তার ওপর আস্থা-বিশ্বাস থাকতে হবে।  ঈমানদারদের রক্ষার বিষয়ে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি অকাট্য এবং সন্দেহাতীত।

খামেনয়ী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর লোকদের স্ত্রী ও সন্তানরা অনেক কষ্ট সহ্য করেন। তাদের পক্ষ থেকে অনেক বেশি ছাড় দিতে হয়। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে গত পহেলা এপ্রিল ইরানের কনস্যুলেটে বোমা হামলায় দুই জেনারেল এবং আরও কয়েকজন সিনিয়র অফিসার সহ ১৬ জন নিহত হয়। এরা ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কর্পস ও কুদস ফোর্সের।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো জুড়ে প্রয়োজনে হামলার যে হুমকি দিয়েছিলেন সে ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে খামেনেয়ী সামরিক কমাণ্ডারদের বলেন, অস্ত্র ও যুদ্ধ কৌশল  পদ্ধতিতে উদ্ভাবনের পাশাপাশি শত্রুর কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান সর্বদা এজেন্ডায় থাকতে হবে। 

 ইরানের সামরিক কর্মকর্তারা এসময় সর্বোচ্চ নেতার কাছে দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের ‘আল-আকসা’ অভিযান এবং ইরানিদের ‘সত্য প্রতিশ্রুতি’ অভিযানের কথা তুলে ধরেন। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বশেষ প্রস্তুতি ও সক্ষমতা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনও সর্বোচ্চ নেতার সামনে উপস্থাপন করাহয়।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news