সৌদি আরব ও আমিরাত ছাড়তে পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর প্রতি ইয়েমেনের হুঁশিয়ারির রহস্য

ইয়েমেনে বেশ কয়েক মাস ধরে যুদ্ধ-বিরতি চলার পর আবারও সেখানে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আগ্রাসী সৌদি জোট যুদ্ধ-বিরতির বিষয়ে ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতৃত্বাধীন জাতীয় মুক্তি মোর্চ্চার সরকারের শর্তগুলো মেনে নিতে অস্বীকার করায় যুদ্ধ-বিরতি নবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এর আগে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া দুই মাসের যুদ্ধ-বিরতি পর পর দুইবার নবায়ন করতে রাজি হয়েছিল সৌদি জোট। এ অবস্থায় ইয়েমেন সরকার সৌদি আরব ও আমিরাতে পুঁজি বিনিয়োগের বিরুদ্ধে বিদেশী কোম্পানিগুলোকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে। 

ইয়েমেনে আট বছর আগে আগ্রাসন শুরু করেছিল পশ্চিমা মদদপুষ্ট সৌদি জোট। সৌদি জোটের নির্বিচার বোমা হামলা ও সর্বাত্মক অবরোধের কারণে ইয়েমেনে বিশ্বের বৃহত্তম মানবীয় সংকট দেখা দেয়। এ অবস্থায় ইয়েমেনে যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় জাতিসংঘের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জোরদারের পাশাপাশি সৌদি-আমিরাতি জোট ইয়েমেনের বিপুল ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মুখে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হওয়ায় গত এপ্রিল মাসে দুই মাসের যুদ্ধ-বিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয় এবং তা দুই বার নবায়ন করে । 

অবশেষে গত দুই অক্টোবর  ইয়েমেনে যুদ্ধ-বিরতির মেয়াদ এমন সময় শেষ হল যখন সৌদি জোট অনেক আগ থেকে প্রায়ই যুদ্ধ-বিরতির নানা শর্ত লঙ্ঘন করছিল। এ অবস্থায় ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতৃত্বাধীন জাতীয় মুক্তি মোর্চ্চার সরকারও কৌশলগত পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

ইয়েমেনের তেলের আয় থেকে দেশটির সরকারকে বঞ্চিত করার সৌদি-আমিরাতি পদক্ষেপ যুদ্ধ-বিরতি ভেঙ্গে পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এই বঞ্চনার কারণে ইয়েমেন সরকার তার কর্মচারীদের বেতন পরিশোধে সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এ অবস্থায় ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র সৌদি আরব ও আরব আমিরাতে পুঁজি বিনিয়োগের বিরুদ্ধে বিদেশী কোম্পানি তথা পশ্চিমা কোম্পানিগুলোর প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবং এইসব কোম্পানিকে এ দুই আরব দেশ ত্যাগ করতে বলেছে।  

ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী দেশটির জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায় করতে আবারও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে বলেও সৌদি-আমিরাতি জোটকে সতর্ক করে দিয়েছে। ইয়েমেনি জাতি যদি তেলের খনির আয় থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে একইভাবে সৌদি-আমিরাতি সরকারকেও তাদের খনিজ সম্পদের আয় থেকে বঞ্চিত করা হবে বলে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়েছে। অন্য কথায় ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী সৌদি ও আমিরাতি তেল বা জ্বালানি ক্ষেত্রগুলোতে আবারও ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপক হামলা চালাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর তা হলে বিশ্ব-বাজারে জ্বালানী তেল ও গ্যাসের দামেও অস্থিতিশীলতা দেখা দিবে। ফলে ইয়েমেনে আবারও যুদ্ধ-বিরতি প্রতিষ্ঠার নতুন  ও আরও গঠনমূলক আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা শুরু হতে পারে।
।খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news