আফগানিস্তান থেকে ১২০০ কোটির মাদক পাচার হচ্ছিল ভারতে, হাতেনাতে ধরল নৌসেনা

মাদক পাচারের খুব বড় চক্র ফাঁস করল ভারতীয় নৌসেনা ও নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। এক কেজি, দু’কেজি নয়, একেবারে ২০০ কিলোগ্রাম আফগান হেরোইন (Afghan Heroin) পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল ভারতে। ইরানের একটি বোটে চাপিয়ে জলপথে পাকিস্তান ঘুরে ভারতে পাচারের চেষ্টা হচ্ছিল সেই মাদক। তার আগেই পর্দা ফাঁস করল ভারতীয় নৌসেনা। গ্রেফতার করা হয়েছে পাচারকারীদের।
নৌসেনা ও নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর (এনসিবি) অফিসাররা জানাচ্ছেন, নৌকায় চাপিয়ে ২০০ কেজির মাদক ঢুকছিল ভারতে। তার আগে পাকিস্তান ঘুরে এসেছিল সেই বোট। সেখানে মাদক চালান করে তারপর ভারত ও শ্রীলঙ্কায় পাচারের পরিকল্পনা ছিল। ২০০ কেজির ওই হেরোইনের বাজারমূল্য আনুমানিক ১২০০ কোটি টাকা।

 মাদক পাচারের (Afghan Heroin) অভিযোগে ৬ জন ইরানের নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে বোটে চাপিয়ে মাদক আনা হচ্ছিল সেটিকেও আটক করেছে নৌসেনা। বৃহস্পতিবার ভারতীয় নৌসেনা ও নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো সমুদ্রে যৌথ অভিযান চালিয়েই ওই বোটটিকে আটক করে। বোটটিকে নিয়ে আসা হয় কেরলের কোচিতে। সেখানেই দেখা যায়, বোটের ভিতরে থরে থরে সাজানো রয়েছে প্লাস্টিক, তার ভিতরে ভরা সাদা রঙের কোনও বস্তু। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তা হেরোইন।
এনসিবি জানাচ্ছে, ওই আফগান হেরোইনের (Afghan Heroin) বাজারে খুব চাহিদা রয়েছে। তাই দামও আকাশছোঁয়া। মাদকগুলি যাতে নষ্ট হয়ে না যায় সে জন্য ওয়াটারপ্রুফ মোড়কে খুব ভালভাবে প্যাকিং করা হয়েছিল। সাত মোড়কের প্য়াকেটে সেগুলিকে রাখা হয়েছিল। প্রত্যেকটি প্যাকেটের উপর আলাদা চিহ্ন ছিল, যা মূলত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মাদকচক্রেই ব্যবহৃত হয়। কয়েকটি প্যাকেটের ওপর কাঁকড়া বিছের চিহ্ন আঁকা ছিল, কিছু প্যাকেটে আবার ছিল ড্রাগনের চিহ্ন। 
আফগানিস্তান থেকে ওই মাদক নিয়ে পাকিস্তান ঘুরে ভারতে ঢুকেছিল ইরানের সেই বোট। ভারতের জলসীমায় ঢোকার পরেই বোট ঘিরে ফেলে নৌসেনা। ভারতীয় নৌসেনাকে দেখে আতঙ্কে মাদকগুলো জলে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে পাচারকারীরা। নিজেরাও জলে ঝাঁপ দিতে যায়। তবে তার আগেই তাদের পাকড়াও করা হয়। নৌসেনা জানাচ্ছে, আরব সাগর ও ভারত মহাসাগরের পথ ধরে মাদক পাচারের কাজ চলে। খুব বড় চক্র কাজ করছে এর পেছনে। 
বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেরোইন উৎপাদক দেশ আফগানিস্তান। বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৮০-৯০ শতাংশ এই দেশ থেকেই ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন জায়গায়। তালিবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আফগানিস্তানে এই মাদকের উৎপাদন বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে বলে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।


খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২২/একে

news