ভারত বিদ্বেষী’ সুয়েলাতেই আস্থা ঋষির, তুমুল ক্ষোভের মুখে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী
একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে ইতিহাসের চাকা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে এখন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। ফলে উপমহাদেশে তাঁকে নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। পাকিস্তানেও সুনাকের শিকড় রয়েছে বলে দাবি অনেকের। কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং ‘ভারত বিদ্বেষী’ নেত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে এনে তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন সুনাক।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নিয়েছেন ঋষি সুনাক। আর মসনদে বসেই মন্ত্রিসভায় সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। ঋষির (Rishi Sunak) দৌলতে ফের ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) পদে বসেছেন ‘ভারত বিদ্বেষী’ সুয়েলা। আর সুনাকের এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। কারণ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও সুয়েলা যে ‘ভারত-হিতৈষী’ নন তা স্পষ্ট। বরং ভারতীয় অভিবাসীদের নিয়ে বার বার আলটপকা মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন তিনি। গত ২৮ অগস্ট এশিয়া কাপে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রভাব পড়ে ব্রিটেনে। গন্ডগোল হয় সেখানে। এর নেপথ্যে অভিবাসী যোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। ভারতের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (FTA)-র ঘোর বিরোধী সুয়েলা। এহেন সুয়েলার মন্ত্রিত্বকালে অভিবাসীদের নিয়ে ‘কঠিন’ পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা।
ব্রিটেনের সদ্যপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের সঙ্গে বিশেষ সদ্ভাব ছিল না সুয়েলার। মতপার্থক্যের জন্য গত ২০ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র সচিবের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেমে দ্বিতীয় রাউন্ডেই হেরে গিয়েছিলেন সুয়েলা। এবার তাঁকে ফিরিয়ে আনায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ঋষি সুনাককে। ক্যারোলাইন লুকাস নামের জনৈক ইউজার টুইটারে লিখেছেন, ‘মধ্যাহ্নভোজের সময় ঋষি সুনাক বলেন, প্রতি স্তরে এই সরকার সততা, পেশাদারিত্ব এবং দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজ করবে। কিন্তু বিকেলে এই ঋষি সুনাকই সুয়েলা ব্রেভারম্যানকে স্বরাষ্ট্র সচিব হিসেবে পুনর্বহাল করেন। এই ব্রেভারম্যানই মন্ত্রিত্বের যে নীতি তা লঙ্ঘন করেছেন এবং শরণার্থীদের ফের রাওয়ান্ডা পাঠানোর পক্ষে সওয়াল করছেন।’ বিরোধী দল লেবার পার্টির এমপিরা বলছেন, সুনাকের সঙ্গে তাঁর পূর্বসূরি বরিস জনসন বা লিজ ট্রাসের বিশেষ কোনও পার্থক্য নেই। শৃঙ্খলাভঙ্গ করে ইস্তফা দেওয়া নেত্রীকেই মন্ত্রিসভার জন্য পছন্দ হল তাঁর!
উল্লেখ্য, সুয়েলা ব্রেভারম্যানের বাবা ছিলেন গোয়ার বাসিন্দা। সুয়েলার মায়ের পূর্বপুরুষদের শিকড় ছিল তামিলনাড়ুতে। গত অক্টোবরে সুয়েলা ব্রিটেনের (Britain) স্বরাষ্ট্র সচিব পদ থেকে ইস্তফা দেন। নিয়ম-বহির্ভূত কাজ করার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি ব্যক্তিগত ইমেল আইডি থেকে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের জরুরি নথি পাঠিয়েছিলেন এক সহকর্মীকে। শোকজ নোটিশে সুয়েলার যুক্তি ছিল, সেটি ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’। তবে কৃতকর্মের জন্য তিনি ক্ষমা চান এবং পদত্যাগ করেন। যদিও ব্রিটেনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসই তাঁকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেছিলেন।
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে