ঢাকা, রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১
Logo
logo

দুই বছরের জন্য ‘স্টুডেন্ট ভিসা’র সীমা বেধে দিল কানাডার সরকার


এনবিএস ওয়েবডেস্ক     প্রকাশিত:  ২৪ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৯:৩৮ এএম

দুই বছরের জন্য ‘স্টুডেন্ট ভিসা’র সীমা বেধে দিল কানাডার সরকার

আগামী দুই বছরের জন্য বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সংখ্যা কমিয়ে আনার নতুন একটি নীতি ঘোষণা করেছে কানাডার সরকার। দেশটিতে আবাসন ও স্বাস্থ্য খাতের যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা সামলাতে শিক্ষার্থী ভিসা দেয়ার হার কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর ফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা অনুমোদনের হার প্রায় ৩৫ শতাংশ কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দেশটির সরকারের হিসেবে অনুযায়ী, এক দশক আগে কানাডায় বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র দুই লাখ ১৪ হাজারের মত। ২০২২ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে আট লাখ ছাড়িয়েছে। কানাডার কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন পদক্ষেপের ফলে পুরো ব্যবস্থায় ‘স্বচ্ছতা’ তৈরি হবে।

কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার সোমবার নতুন নীতি ঘোষণা করে বলেছেন, কানাডাতে ২০২৪ সালে মাত্র তিন লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার অনুমতি পাবে।

কানাডার বিভিন্ন রাজ্যকে তাদের জনসংখ্যা ও বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় নতুন করে কতজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করতে পারবেন, সেই কোটা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এরপর প্রদেশগুলো সিদ্ধান্ত নেবে কীভাবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে তারা এই বরাদ্দের সমন্বয় করবে।

তবে কানাডা সরকারের নতুন এই নীতিটি কেবল দুই বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা বা স্নাতক পর্যায়ের প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। যারা বর্তমানে সেখানে পড়াশোনা করছেন, তাদেরকে স্টাডি পারমিট নতুন করে নবায়নের ক্ষেত্রে এর কোন প্রভাব পড়বে না। দেশটির সরকার এখন থেকে আর ‘পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ মডেলে চলা কলেজের স্নাতক পর্যায়ের বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের অনুমতি দেবে না।

“কিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অল্পকিছু শিক্ষক ও কর্মী নিয়ে তাদের ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষর্থী নেওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে উচ্চ টিউশন ফি গ্রহণ করছে। কোনোভাবেই এটি গ্রহণযোগ্য নয়” বলেন কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার।

তিনি এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, নতুন এই পদক্ষেপ মোটেই “বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নয়”। এর ফলে বরং ভবিষ্যতে যারা অন্য দেশ থেকে কানাডাতে পড়তে আসবে, তারা আরও ভালো মানের শিক্ষা ও পরিবেশ পাবে।

ট্রুডো সরকার এমন একটি সময়ে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো, যখন তার সরকার উচ্চমূল্যের আবাসন সমস্যা মোকাবেলার ব্যবস্থা নিতে চাপের মুখে রয়েছে।

কানাডায় একটি বাড়ির দাম এখন গড়ে সাত লাখ ৫০ হাজার কানাডিয়ান ডলার। এছাড়া গত দুই বছরে দেশটিতে প্রায় ২২ শতাংশ বাড়িভাড়া বেড়েছে। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পেছনে দেশটির অভিবাসী সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ।

২০২২ সালে কানাডার ইতিহাসে প্রথমবার মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দশ লাখেরও বেশি মানুষ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার বড় অংশই অভিবাসী।  ফলে দেশটির মোট জনসংখ্যা এখন চার কোটিতে গিয়ে ঠেকেছে, যেটি আরও একটি রেকর্ড।

কানাডার জাতীয় আবাসন সংস্থা ‘কানাডা মর্টগেজ অ্যান্ড হাউজিং কর্পোরেশন বলছে, বাড়ির দাম এবং বাড়ি ভাড়া সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে আনতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে আরও প্রায় ৩৫ লাখ ঘর নির্মাণের প্রয়োজন হবে।