ঢাকা, শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Logo
logo

জার্মানি মুসলিম বিরোধী বর্ণবাদ দমনে পিছিয়ে পড়ছে: এইচআরডাব্লিউ


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ০২:০৪ পিএম

জার্মানি মুসলিম বিরোধী বর্ণবাদ দমনে পিছিয়ে পড়ছে: এইচআরডাব্লিউ

জার্মানি মুসলিম বিরোধী বর্ণবাদ দমনে পিছিয়ে পড়ছে: এইচআরডাব্লিউ

খুরহিউম্যান রাইটস ওয়াচ আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বলেছে, ঘৃণা ও বৈষম্যের ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে বর্ণবাদ থেকে মুসলমানদের এবং মুসলমান বলে মনে করা লোকদের রক্ষা করতে জার্মান সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। 

জার্মানি মুসলিম বিরোধী অপরাধের কার্যকরী নীতিমালা নেই। সরকারের নেই কোনও নজরদারি ও তথ্য। এর ফলে ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিতে  পারছে না।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ইউরোপে বর্ণবাদের উপর গবেষক আলমাজ টেফেরা বলেছেন, মুসলিমদের ঘৃণা ও বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে জার্মান সরকারের ব্যর্থতার কারণ মুসলিমদের ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতা। মুসলমানরা কি কারণে বর্ণবাদ অনুভব করছে যা শুধু কেবল বিশ্বাস-ভিত্তিক শত্রুতা নয়। জার্মানিতে মুসলিম বিরোধী ঘৃণা, বৈষম্য, বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনা এবং মুসলিমদের ডেটা সম্পর্কে স্পষ্ট বোঝাপোড়া ছাড়া জার্মান কর্তৃপক্ষের  যেকোনো প্রচেষ্ঠা অকার্যকর হবে।

২০২৩ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৯ মাসে মুসলিম ঘৃণামূলক অপরাধের পরিসংখ্যানে ৬৮৬টি "ইসলামবিরোধী" অপরাধ গণনা করা হয়েছে। ২০২২ সালে ১২ মাসে তা ছিলো ৬১০টি। ২০২৪ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে   অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে কোন তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে সংকট সৃষ্টি হলে অক্টোবর থেকে মুসলিম বিরোধী ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে জার্মান নাগরিক সমাজের দলগুলো।

জার্মানির একটি বেসরকারি সংস্থার নেটওয়ার্ক, হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বলেছে ২০২৩ সালে মুসলিম-বিরোধী ঘটনা ভয়ঙ্কর রূপলাভ করেছে। নভেম্বর মাসে দিনে গড়ে তিনটি মুসলিম বিরোধী ঘটনার নথিভুক্ত হয়েছে। একটি ক্ষেত্রে, একজন ব্যক্তিকে মুসলিম "সন্ত্রাসী" বলে পাবলিক বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়, তাকে লাঞ্ছিত করা হয় এবং পেটানোর জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কিছু সুশীল সমাজের সংগঠন এই ধরনের ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু জার্মান সরকার এখনও দেশব্যাপী পর্যবেক্ষণ এবং ডেটা সংগ্রহের জন্য একটি পরিকাঠামো তৈরি করতে পারেনি। 

২০২৩ সালের জুন মাসে প্রকাশিত জার্মানিতে মুসলিম-বিরোধী ঘটনার উপর তিন বছরের গবেষণার তথ্যে দেখা গেছে, দেশটিতে মুসলিম বিরোধী মনোভাব ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা সুপারিশ করেছে জার্মান সরকারকে নিয়মিত বর্ণবাদ থেকে মুসলিম বিরোধী ঘৃণাকে আলাদা করা উচিত নয় বরং বর্ণবাদের স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার বলেছেন, তিনি প্রতিবেদনের সবকিছুর সঙ্গে একমত নন।

জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, একটি জাতিগত নীরিক্ষা অনুপস্থিত আছে ইসলামবিরোধী অপরাধের বিষয়ে। তবে, মন্ত্রক কীভাবে তার পদ্ধতির সংশোধন করতে চায় সে সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত জানায়নি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মুসলিম-বিরোধী বিদ্বেষ এবং বৈষম্যের উপর যে কোনো ফোকাস যা বর্ণবাদকে অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে কার্যকর নীতির অভাবে। 

২০১৭ সালে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এজেন্সি ফর ফান্ডামেন্টাল রাইটস জার্মানিসহ ১৫টি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রে মুসলিম বিরোধী বৈষম্য সংক্রান্ত  জরিপ  করে দেখেছে ১০ জনের মধ্যে ১ জন  তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিকতম মুসলিম বিরোধী ঘটনার রিপোর্ট করেছেন।  বেশিরভাগই মনে করেছে, এটি রিপোর্ট করার মাধ্যমে কিছুই হবে না বা পরিবর্তন হবে না। যারা ঘটনার রিপোর্ট করেছেন তাদের মধ্যে ৮১শতাংশ বলেছেন, পুলিশ যেভাবে বিষয়টি পরিচালনা করেছে তাতে কিছুটা তারা অসন্তুষ্ট।

ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ জার্মানিতে মুসলিম বিরোধী সহিংসতা কোনো নতুন ঘটনা নয়। ২০২০ সালে জার্মানির  হানাউতে একটি অতি-ডানপন্থী উগ্রপন্থী এবং বর্ণবাদী আক্রমণে নয় জন মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছিল। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি