ঢাকা, বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪ | ৪ পৌষ ১৪৩১
Logo
logo

২০২৪-এ মোদীকে হারাতে মমতার হাত ধরতেই হবে সোনিয়াকে! কংগ্রেসকে সুপারিশ প্রশান্ত কিশোরের


এনবিএস ওয়েবডেস্ক     প্রকাশিত:  ১৮ এপ্রিল, ২০২২, ০৭:০৪ পিএম

২০২৪-এ মোদীকে হারাতে মমতার হাত ধরতেই হবে সোনিয়াকে! কংগ্রেসকে সুপারিশ প্রশান্ত কিশোরের

২০২৪-এ মোদীকে হারাতে মমতার হাত ধরতেই হবে সোনিয়াকে! কংগ্রেসকে সুপারিশ প্রশান্ত কিশোরের


২০১১-র বিধানসভা ভোটে সিপিএমকে (CPIM) হারাতে জোট বেঁধেছিল কংগ্রেস (Congress) এবং তৃণমূল (Trinamool Congress) । জেতার পরে দুদলের সরকার হয়। যদিও কিছুদিনের মধ্যে কংগ্রেস সরকার থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর থেকে বর্তমান সময়ে একদিকে যেমন অধীর চৌধুরীরা (Adhir Chowdhury) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করছেন, অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কংগ্রেসকে ছেড়ে কথা বলছেন না। কিন্তু ২০২৪-এর কথা বিবেচনা করে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) সনিয়া গান্ধীকে যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের নীতি নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়েছে।

গত শনিবার সোনিয়া গান্ধীর বাসভবনে গিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। সেখানে শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্বের উপস্থিতিতে ভোটকুশলীর সঙ্গে আলোচনা হয়। প্রশান্ত কিশোর সেখানে ২০২৪-এর লক্ষ্যে কংগ্রেসের জীবন জান করতে বেশ কিছু সুপারিশ করেন বলে জানা গিয়েছে। সেই সুপারিশের মধ্যে অন্যতম হল বাংলায় কংগ্রেসকে লড়াই করতে হবে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে। কেননা বাংলায় বামেদের থেকে তৃণমূল শক্তিশালী। যার অর্থ সোনিয়া গান্ধীর থেকে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জোট প্রস্তাব। এছাড়াও মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি জোট এবং তামিলনাড়ুতে ডিএমকের সঙ্গে জোট করে লড়াইয়ের কথা বলেছেন প্রশান্ত কিশোর। কংগ্রেসকে করা সুপারিশে প্রশান্ত কিশোর ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে ৩৬৫ থেকে ৩৭০ টি আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেছেন। হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব, দিল্লি, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটক, ছত্তিশগড় উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে কংগ্রেসকে একা লড়াইয়ের পরামর্শ তিনি দিয়েছেন। প্রয়োজনে ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে ভোট পরবর্তী জোট সম্ভাবনা খোলা রাখার কথা বলেছেন প্রশান্ত কিশোর।

সাম্প্রতিক সময়ে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনী হারের পরে দেশে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে গোয়ায় প্রচারে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সারা দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই ভুলে গিয়েছে কংগ্রেস। তৃণমূল লড়াই করছে বলেই তাদেরকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন, সোনিয়া-রাহুলের কাছের লোক বলে পরিচিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন কংগ্রেস না থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীর জন্মই হতো না। পাশাপাশি তিনি গোয়া, মনিপুরের মতো রাজ্য কংগ্রেসকে দুর্বল করার জন্য তৃণমূলকে অভিযুক্ত করেছিলেন। আর বাংলায় সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক খুন এবং ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তৃণমূল সরকার বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছে কংগ্রেস। ঝালদায় কাউন্সিলর খুনে সরাসরি তৃণমূলকে অভিযুক্ত করেছে কংগ্রেস। হাওড়ার আমতা আনিস খানের খুনে প্রশাসন এবং তৃণমূলকে অভিযুক্ত করে কর্মসূচি পালন করেছেন অধীর চৌধুরী। অতি সম্প্রতি বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে প্রচারে সিপিএম প্রার্থীর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের তরফে মন্তব্যের কথা তুলে ধরা হলে প্রবীন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। অর্থাৎ রাজ্যে কংগ্রেসের কাছে তৃণমূল যতটা না কাছের, তার থেকে কাছের বামেরা।

তবে কংগ্রেস রাজ্যে এতা লড়াই করুক কিংবা জোট বেঁধে, তাদের সিদ্ধান্তের পুরোটাই যে হাইকমান্ড নির্ভর তা নিয়ে ইঙ্গিত আগেই করেছে প্রদেশ কংগ্রেস।

কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে রাজ্যে বামেদের একটা বড় অংশ বিশেষ করে আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের তীব্র আপত্তি রয়েছে। আপত্তি রয়েছে সিপিএম-এর একটা অংশেরও। ফলে যদি হাইকমান্ডের নির্দেশের জেরে কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে জোট বাঁধে, তাহলে বামেদের বড় অংশ হাফ বছেড়ে বাঁচবে। তবে সবই নির্ভর করছে ভবিষ্যতের অনেক যদি কিন্তুর ওপরে। হাজার হোক রাজনীতি সম্ভাবনাময় শিল্প!খবর ওয়ানইন্ডিয়ার