ঢাকা, বুধবার, অক্টোবর ১৬, ২০২৪ | ১ কার্তিক ১৪৩১
Logo
logo

তুরস্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করি: নওরোজি


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:১০ পিএম

তুরস্কের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করি: নওরোজি


আইআরআইবি’র বিশ্ব কার্যক্রমের প্রধান আহমাদ নওরোজি (ডানে), তুর্কি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভির মহাপরিচালক জাহিদ সুবাজি

তুরস্কের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভির মহাপরিচালক জাহিদ সুবাজি সম্প্রতি যে ইরানবিরোধী বক্তব্য  দিয়েছেন তাকে তুর্কি রাজনীতিবিদরা ইহুদিবাদী ইসরাইলকে খুশি করার উদ্দেশ্যে দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

সুবাজি গত বৃহস্পতিবার তুরস্কের বুরসা শহরে ‘বুরসা উলুদাগ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড বিষোদগার করেন। পার্সটুডে’র রিপোট অনুযায়ী, জাহিদ সুবাজি ওই অনুষ্ঠানে জানান, টিআরটি’তে ৪১টি বিদেশি ভাষায় অনুষ্ঠান সম্প্রচার হয়। এরপর তিনি ইরানের বিরুদ্ধে হঠাৎ বিস্ময়কর উক্তি করেন। তিনি বলেন, “আমরা চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফার্সি ভাষায় টিভি চ্যানেল চালু করতে যাচ্ছি। আমাদের উচিত ইরানকে ডিস্টার্ব করা ও কষ্ট দেয়া। আমাদের উচিত ইরানকে অস্থির করে তোলা!”             

এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তুরস্কের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।  দেশটির জাফর পার্টির নেতা ওমিদ ওজদাগ নিজের অফিসিয়াল টুইটার পেজে লিখেছেন: “দেখেশুনে মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন একেপি ইরানের মোকাবিলায় আমেরিকা ও ইসরাইলকে সন্তুষ্ট করার পথ বেছে নিয়েছে।”

তুরস্কের মাদারল্যান্ড পার্টির নেতা দোগো প্রিনচেক এ সম্পর্কে বলেন: “টিআরটি’র মহাপরিচালকের বক্তব্য কোনো অবস্থায় সরকারি শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। কেবলমাত্র আমেরিকা ও ইসরাইলের দোসরদের পক্ষেই এ ধরনের বক্তব্য মুখে উচ্চারণ করা সম্ভব। যে কাজের মাধ্যমে ইরানকে কষ্ট দেয়া যায় তা আমেরিকা ও ইসরাইলকে সন্তুষ্ট করবে। তার এ বক্তব্য তুর্কি সরকারের নীতিতে পরিবর্তনের আভাস দিচ্ছে।”   

এ সম্পর্কে বিশিষ্ট রাজনৈতিক ভাষ্যকার এহসান মোয়াহ্‌হেদিয়ান ‘ইরানিয়ান ডিপ্লোমেসি’ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে লিখেছেন: “তুরস্কের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভির মহাপরিচালক জাহিদ সুবাজি অত্যন্ত ধৃষ্ঠতার সঙ্গে বলেছেন: ‘আমরা চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফার্সি ভাষার টিভি চ্যানেল চালু করতে যাচ্ছি। আমাদের উচিত ইরানকে ডিস্টার্ব করা ও কষ্ট দেয়া। আমাদের উচিত ইরানকে অস্থির করে তোলা!’ বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে কাউকে সাবুজির এই বক্তব্যের সমালোচনা করে বক্তব্য দিতে দেখা যায়নি। তুরস্ক কেন ইরানকে অস্থির করে তুলবে? বর্তমান স্পর্শকাতর সময়ে যখন ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইহুদিবাদী ইসরাইলের জঘন্য অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত করা উচিত তখন এ ধরনের বক্তব্যের কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে? তুরস্কের একজন সরকারি কর্মকর্তার পক্ষে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের সঙ্গে আলোচনা ও তার অনুমতি ছাড়া কি এ ধরনের বেপরোয়া বক্তব্য প্রদান ও হুমকির ভাষা প্রয়োগ সম্ভব?”    

কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, সৌদি আরব ও ইসরাইল মিলে ইরানের ওপর চাপ প্রয়োগ করার লক্ষ্যে যেমন ‘ইরান ইন্টারন্যাশনাল’ নামক টিভি চ্যানেল চালু করেছে, তুরস্কও ঠিক তেমনই একটি চ্যানেল চালু করতে চায়। তাদের মতে, তুর্কি রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভির মহাপরিচালকের ইরান বিরোধী এই বিষোদগারের পরিণতি ভালো হবে না।  

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জাতীয় সম্প্রচার সংস্থা আইআরআইবির বিশ্ব কার্যক্রমের প্রধান আহমাদ নওরোজি নিজের অফিসিয়াল এক্স পেজে দেয়া এক পোস্টে লিখেছেন: “আমরা যখন ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইহুদিবাদী ইসরাইলের নিরবচ্ছিন্ন গণহত্যার প্রতি আমাদের দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত রেখেছি তখন এ ধরনের অভদ্র ও অসতর্ক বক্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার আমরা সংরক্ষণ করি।  আমরা আইআরআইবি থেকে এ প্রত্যাশা করি যে, তুরস্ক সরকার উপযুক্ত উপায়ে এই বক্তব্যের নিন্দা জানাবে এবং এ ব্যাপারে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবে।

পার্সটুডে