ঢাকা, শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Logo
logo

আমেরিকার মোকাবেলায় বহুপাক্ষিক বিশ্ব ব্যবস্থা চান পেজেশকিয়ান


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৫ অক্টোবর, ২০২৪, ০৭:১০ পিএম

আমেরিকার মোকাবেলায় বহুপাক্ষিক বিশ্ব ব্যবস্থা চান পেজেশকিয়ান


রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় বহুপাক্ষিকতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

ব্রিকস গ্রুপের ১৬তম শীর্ষ সম্মেলন রাশিয়ার কাজান শহরে গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। মাসুদ পেজেশকিয়ান ব্রিকস সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অন্যতম নেতা হিসাবে এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা দেওয়ার সময় পেজেশকিয়ান বিভিন্ন দেশের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেন। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি যিনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রাশিয়া সফর করেছেন এই শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে প্রেসিডেন্টের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সম্পর্কে বলেছেন, 'এই শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে এসব বৈঠকের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল এবং সেটি ছিল বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান রাশিয়া, বেলারুশ, ভেনিজুয়েলা, চীন, মিশর, দক্ষিণ আফ্রিকা, বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট, ভারত ও আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের প্রধানের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন।'

বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের বর্তমান সংঘাত এবং গাজা ও লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি আরও বলেন, এসব বৈঠকে এ অঞ্চলের নানা ইস্যু বিশেষ করে এ অঞ্চলে উত্তেজনা কমানোর প্রয়োজনীয়তা, ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা,  যুদ্ধবিরতি এবং শরণার্থীদের পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

ব্রিকস সম্মেলনের অবকাশে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলো বিভিন্ন দিক থেকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথম গুরুত্ব ছিল এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকার চারটি মহাদেশের সরকারপ্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা। এই সরকারগুলোর প্রত্যেকটি এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে এবং কিছু বিশ্বস্তরেও রয়েছে। এই বৈঠকগুলো আন্তর্জাতিক স্তরে ইরান একঘরে হয়ে পড়ার দাবির অসাড়তা প্রমাণ করে এবং এটিকে দ্বিপাক্ষিক ক্ষেত্রে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ বাড়ানোর একটি সুযোগ হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক প্রকল্প রয়েছে।

এছাড়া, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক সম্প্রসারণ,বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বাণিজ্যে নতুন পদ্ধতির ব্যবহার এবং নিষেধাজ্ঞা অপসারণ নিয়ে তাদের সঙ্গে বিস্তর আলোচনা হয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের পাশাপাশি কিছু দেশের কর্মকর্তা স্পষ্টভাবে বিশ্বস্তরে একটি বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হওয়ার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাবাদের মোকাবিলা করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, ব্রিকস সদস্য দেশগুলোর বেশিরভাগের স্বার্থ হল বিশ্বস্তরে মার্কিন একতরফাবাদের মোকাবিলা করা। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একতরফা সিন্ধান্ত ব্যবহার করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে স্বাধীন দেশগুলো উপর অবৈধ চাপ সৃষ্টি করে। এ প্রসঙ্গে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ব্রিকস এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি নতুন শক্তিমান ব্লক হয়ে উঠছে। এই ব্লকটি এমন দেশগুলো নিয়ে গঠিত যারা একতরফাবাদের বিরুদ্ধে এবং বহুপাক্ষিকতার উপর ভিত্তি করে এবং পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর একচেটিয়াকরণ ছাড়াই একটি ন্যায্য বিশ্ব ব্যবস্থার সন্ধান করছে।

পার্সটুডে