ঢাকা, শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪ | ৩ কার্তিক ১৪৩১
Logo
logo

স্বাধীনতা ৭৬: কেউ কথা রাখেনি, নদীর উপর বাঁশ-কাঠের সেতু বানিয়ে নিলেন গ্রামবাসীরাই


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১০:০৯ পিএম

স্বাধীনতা ৭৬: কেউ কথা রাখেনি, নদীর উপর বাঁশ-কাঠের সেতু বানিয়ে নিলেন গ্রামবাসীরাই

স্বাধীনতা ৭৬: কেউ কথা রাখেনি, নদীর উপর বাঁশ-কাঠের সেতু বানিয়ে নিলেন গ্রামবাসীরাই

 বর্ষা বাদে বাকি সময় হেঁটেই পেরনো যায় নদীটি। কিন্তু বর্ষার সময় তিন-চার মাস সেই নদীই হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর। তখন ওপারে পৌঁছতে পাঁচ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয় গ্রামবাসীদের। আর হাঁট-বাজার, স্কুল, হাসপাতাল, পঞ্চায়েত অফিস, সবই নদীর ওপারে। ফলে গঞ্জে যেতে বর্ষার দিনগুলি পাঁচ কিলোমিটার হাঁটাই দস্তুর ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) চাতরা জেলার বগাসাদাম গ্রামের বাসিন্দাদের (villagers)।
স্বাধীনতার পর ৭৫টি বছর পেরলো, কেউ কথা রাখেনি, বলছিলেন স্থানীয় শিক্ষক সন্দীপ কুমার পাঠক। দু’শো ফুট লম্বা একটা সেতু ((bridge), এই তাঁদের দাবি। এই দাবিতে বাপ-ঠাকুরদারাও অনেকবার ছুটেছেন পঞ্চায়েত অফিস, বিডিও-র দফতরে। প্রতিশ্রুতি মিলেছে বিস্তর। কিন্তু কাজ হয়নি।

হালে হাল ফিরেছে গ্রামের। দেশের নানা জায়গায় কাজের সন্ধানে যান এ গ্রামের অনেকেই। করোনার সময় তাঁদের অনেকেই গাঁয়ে ফিরে আসেন। সেই পরিযায়ী শ্রমিকেরাই গল্প করেছেন অনেক রাজ্যে এখনও কাঠের সেতুর উপর দিয়ে দিব্যি বাস, লরিও চলে। আর এ গ্রামে তো যানবাহন বলতে সাইকেল, ভ্যান রিকশা আর গুটিকয়েক গরুর গাড়ি। চাষবাসে ট্রাক্টর ব্যবহারের সঙ্গতি কারও নেই। ফলে ভারী যানবাহন চলাচলের প্রশ্ন আসে না। অতএব, একটা বাঁশ-কাঠের সেতুই যথেষ্ট। আর তাই যদি হবে, তাহলে আর সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকার কী দরকার!

সেই ভাবনাই সম্প্রতি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয় গ্রামবাসীদের বৈঠকে। তৈরি হয় শ’ দুই গ্রামবাসীর দল। গ্রামবাসীরাই কেউ বাঁশ, কেউ কাঠ, কেউ টিনের শিট দিয়েছেন। সামান্য অর্থ সংগ্রহ করা হয় পেরেক, দড়ি ইত্যাদি কিনতে। মাত্র দু’দিনে তৈরি করে ফেলেন দু’শো ফুট লম্বা বাঁশ-কাঠের সেতু। 

‘ইউপি+বিহার, গয়ি মোদী সরকার’ নীতীশের সঙ্গে বৈঠকের পর অখিলেশের স্লোগান
নদী এখন জলে টইটুম্বুর। তারমধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলে সেতু তৈরির কাজ। সে জন্যই প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি লোককে কাজে লাগাতে হয়েছিল। সোমনাথ মাহতো নামে এক গ্রামবাসী বলছিলেন, সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে হাজার চারেক টাকা। গ্রামবাসীরা নিজেদের সাধ্য মতো চাঁদা দিয়েছেন।

গ্রামপ্রধান কাঞ্চন দেবী জানান, ‘বাঁশের সেতুটি নির্মাণের পর ৫ কিলোমিটার দূরত্ব মাত্র আধা কিলোমিটারে নেমে এসেছে।’
সরকারি অবহেলায় তিনিও বিরক্ত। বলেন, ‘রাজ্য সরকার এবং এমএলএ, এমপি’রা আমাদের যন্ত্রণার কথায় কর্ণপাত করেনি। অবশেষে, আমরা নিজেরাই নিজেদের রসদ আর টাকায় বানিয়ে নিলাম সেতু। কাঞ্চন দেবী আরও যোগ করেছেন, মাসখানেক আগেও সেতু তৈরির চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু প্রবল স্রোতে কাঠ এবং বাঁশ ভেসে যায়।’ তবে তাতে গ্রামবাসীদের সংকল্প ভেসে যায়নি। ‘গ্রামের যুবকরা ফের মাত্র দুই দিনের চেষ্টায় সেতুটি দাঁড় করিয়েছে’, বিস্ময়ের সঙ্গে বলছিলেন তিনি। খবর দ্য ওয়ালের/এনবিএস/২০২২/একে