জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস (ওএইচসিএইচআর) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের বিক্ষোভ দমনে তৎকালীন সরকার কঠোর শক্তি প্রয়োগ করেছিল। বিক্ষোভ সহিংস হওয়ার আগেই সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এতে র‍্যাব, বিজিবি এবং আনসার বাহিনীকে সক্রিয় করা হয়েছিল, যা ক্ষমতা ধরে রাখার একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ ছিল বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

জাতিসংঘের মতে, ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি দলের সমর্থকদের দ্বারা সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন বেআইনি উপায়ে বিক্ষোভ দমন করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন রাজনৈতিক বিরোধীরা ব্যবহার করতে পারে এমন আশঙ্কায় সরকার কঠোর অবস্থান নেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে ছাত্র আন্দোলন দমনে সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই নিয়োগের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে এই কঠোর পদক্ষেপকে সমর্থন করে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে হুমকি দিতে থাকেন।

জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে সরকার ব্যাপক সহিংস দমন অভিযান চালায়। এতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক গ্রেফতার ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্রদের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীরা আক্রমণ চালায়, যা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের ইন্ধনে সংঘটিত হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়, হেলিকপ্টার থেকে ভয় দেখানো হয়, এবং পুলিশ ও র‍্যাব অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করে। এসব পদক্ষেপ বিক্ষোভকারীদের আত্মরক্ষায় বাধ্য করে। জাতিসংঘ বলেছে, সরকারি বাহিনীর প্রতিক্রিয়া অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত ছিল।

news