প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাসেই সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ঐতিহাসিক ‘জুলাই সনদ’ জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। শুক্রবার (৬ জুন) ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “জুলাই সনদ হবে একটি প্রতিশ্রুতি দলিল—সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মত প্রস্তাবসমূহ এতে থাকবে। দলগুলো স্বাক্ষর করে জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণে তাদের অঙ্গীকার জানাবে।”
তিনি জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শহীদদের পরিবারকে সম্মান জানাতে এবং তাদের ত্যাগের স্বীকৃতি দিতে ৬৩০টি শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ইতোমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। আরও ৮৩৪টি পরিবারের মধ্যে যাদের ওয়ারিশ নির্ধারিত হয়নি, তাদেরও সহায়তা প্রক্রিয়াধীন।
গণ-অভ্যুত্থানে আহত প্রায় ১২,৫০০ জনকে ১০৬ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ১৫,০০০ জনের বেশি আহত ব্যক্তি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। ৫১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে, এতে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৬১ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, “আমাদের ন্যূনতম তিনটি কাজ সম্পন্ন করতেই হবে—এক: বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, দুই: রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে ঐক্যমতের ভিত্তিতে রোডম্যাপ প্রণয়ন, তিন: একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তর।”
গুম ইস্যুতে তিনি বলেন, “স্বাধীন গুম কমিশন নির্মম সত্য উদঘাটন করছে। ট্রেনের নিচে ফেলে দেওয়া, ইটভাটায় ছুঁড়ে মারা কিংবা নদীতে ডুবিয়ে হত্যা—এইসব ঘটনা প্রমাণ করে আমরা কী ভয়াবহ সময় অতিক্রম করেছি।” কমিশনের দুটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন ইতোমধ্যেই জমা দেওয়া হয়েছে, আর গুম বিরোধী আইনও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।
“এই চুক্তি শহীদদের রক্তের ঋণ। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, এ দেশকে ন্যায়বিচার ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করব।” — বলেন প্রধান উপদেষ্টা।


