দেশে পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও খুচরা বাজারে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। মাত্র দুই দিনের মধ্যে এই তীব্র মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ ক্রেতাদের চরম বিরক্ত করে তুলেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, উৎপাদন এলাকার সরবরাহ কমে যাওয়াতেই এমন হয়েছে। তবে বাজার–সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ—একটি সিন্ডিকেট ইচ্ছাকৃতভাবে মজুদ আটকে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে এবং একই সঙ্গে ভারত থেকে আমদানির অনুমতি পেতে সরকারকে চাপ দিচ্ছে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, কচুক্ষেত, ইব্রাহিমপুর ও ভাসানটেক ঘুরে দেখা গেছে—দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায়। অথচ দুই দিন আগেও দাম ছিল ১১০–১২০ টাকার মধ্যে।

পাইকাররা জানান, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও পাবনার হাটগুলোতে গত দুই দিনে পাইকারি দামই কেজিতে ৩০–৪০ টাকা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সজীব শেখ বলেন, “৮০ বস্তা কেনার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু সরবরাহ খুব কম। মাত্র ২০ বস্তা পেয়েছি। তাই বাধ্য হয়েই দাম বাড়াতে হচ্ছে।”

খুচরা বিক্রেতাদের মতে, নতুন দাম শুনে অনেক ক্রেতাই অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাদের ধারণা, নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলে বা আমদানি শুরু হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বাজারসংশ্লিষ্টদের অনেকেই বলছেন, গত মৌসুমে কৃষকেরা ভালো দাম না পেয়ে পেঁয়াজ দ্রুত বিক্রি করে দিয়েছিলেন। ফলে উৎপাদন এলাকায় মজুদ কমে গেছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে একটি অসাধু চক্র। তারা গুদামে পেঁয়াজ মজুদ করে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে, যাতে দাম আরও বাড়ে এবং আমদানি খোলার প্রয়োজনীয়তা ‘প্রমাণ’ করা যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) ড. জামাল উদ্দীন বলেন, “বাস্তবে বাজারে কোনো ঘাটতি নেই। সিন্ডিকেট ইচ্ছে করে সংকট তৈরি করছে, আমদানির অনুমতি আদায়ের জন্য দাম বাড়াচ্ছে। দেশের বিভিন্ন গুদামে এখনো এক লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে।”

 

news