‘মহানায়ক’খ্যাত অভিনেতা উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবস

উত্তম কুমার (প্রকৃত নাম অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়) ছিলেন একজন ভারতীয়-বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা, চিত্রপ্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সঙ্গীত পরিচালক ও গায়ক। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে তাঁকে ‘মহানায়ক’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। উত্তম কুমারকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জাত অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি হলেন বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ও সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা। 

তাঁর ভক্তরা তাঁকে ‘গুরু’ বলে ডাকেন। উত্তম কুমার ৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ছোটো ভাই তরুণ কুমার ছিলেন বাংলা সিনেমার এক জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর বাবা ছিলেন কলকাতার মেট্রো সিনেমা হলের এক সাধারণ কর্মচারী। 

উত্তম কুমার সাউথ সাবার্বাস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পাঁচ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘মুকুট’ নাটকে অভিনয় করে তুমুল প্রশংসিত হন এবং একটি সোনার পদক যেতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ১৯৪৫ সালে কলকাতার গোয়েঙ্কা কলেজে অব কমার্সে ভর্তি হন। পারিবারিক আর্থিক অনটনের জন্য কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি।  উত্তম কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল ‘দৃষ্টিদান’। 
এর আগে তিনি ‘মায়াডোর’ নামে একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন কিন্তু সেটি মুক্তিলাভ করেনি। এরপর ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ মুক্তি পাবার পরে তিনি চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ সিনেমাতে তিনি প্রথম অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই সিনেমার মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়। 

উত্তমকুমার এবং সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে অনেকগুলো ব্যবসায়িকভাবে সফল এবং একই সঙ্গে প্রশংসিত চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকায় একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলোÑ ‘হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ এবং ‘সাগরিকা’। উত্তম কুমার বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তাঁর অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছেÑ ‘ছোটিসি মুলাকাত’, ‘অমানুষ’ এবং ‘আনন্দ আশ্রম’ অন্যতম। ‘মহানায়ক’ খ্যাত  এই অভিনেতা ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই কলকাতায় প্রয়াত হন। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news