কোভিডের সময় খুবই ডিপ্রেশনে ছিলাম, আসলেই কি মাসুদরানা ছবিটি হবে : এবিএম সুমন

বাংলাদেশের একটি চরিত্রকে বিশ্বায়ন করা হচ্ছে। তুলে ধরা হচ্ছে সারা পৃথিবীতে।  এই চরিত্র হচ্ছে ' মাসুদরানা। অথচ এই ছবিটি আসলেই হবে কি না তা নিয়ে কোভিডের সময় খুবই ডিপ্রেশনে ছিলাম। আসলেই কি ছবিটা হবে। কবে হবে। এনিয়ে ভাবতাম। অনেকেই জানতে চাইতেন আসলেই কি আমাদের মাসুদরানা প্রজেক্টটা হবে কি না। কারণ অনেকেই জানতেন আমি মাসুূদরানা করছি। আজ তা বাস্তবায়িত হয়েছে। আগামি ২৫ আগষ্ট বাংলাদেশ, আমেরিকা ও কানাডার থিয়েটারে ( সিনেমা হলে) এক সাথে মুক্তি পেতে যাচ্ছে।।ছবিটির নাম ' এমআর-৯ : ডু অর ডাই'।

মঙ্গলবার রাতে শেরাটন হোটেলে ছবির মুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত প্রেস মিটে এভাবেই বলেন মাসুদরানা চরিত্রে অভিনয় শিল্পী এক সময়ের সাড়া জাগানো র্যাম  মডেল এবিএম সুমন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নির্মাতা আসিফ আকবরের পরিচালনায় এর নাম ভূমিকায় আছেন এবিএম সুমন। সঙ্গে আছেন বাংলাদেশসহ হলিউডের বেশ কয়েকজন অভিনেতা।

এবিএম সুমন বলেন, পরিচালক  আসিফ আকবরের বাবা এনায়েত আকবর মিলনের কারণে আমি আজ অভিনেতা। পরিচালকের ফ্যামিলি আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে এ পথে চলার জন্য।

তিনি বলেন,  ছবির পরিচালক আসিফ আকবর, মিঠু খান ও  জাজের কর্নধার আব্দুল আজিজ ভাইয়ের সহযোগিতা না পেলে আজ আমি মাসুদরানা হতে পারতাম না। মাসুদ রানা আমার স্বপ্নের একটি চরিত্র। যা আমি দীর্ঘদিন ধরে আমার ভেতরে ভেতরে লালিত ছিলো। আজ তা আলোরমুখ দেখতে যাচ্ছে। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি মাসুদরানা হতে। এখন জাজ করবেন দর্শকরা।

মাসুদরানারূপী এবিএম সুমন বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে কত রাত জেগে জেগে আমি, ছবির পরিচালক ও আজিজ ভাই কাটিয়েছি তার হিসাব নেই। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিলো মাসুূদরানা প্রজেক্টটি সফল করা।

তিনি বলেন, আজ আমরা হলিউডে গিয়ে কাজ করেছি। এই ছবির মধ্য দিয়ে আমরা হলিউডে পা রাখলাম। এটি একটি হিষ্ট্রি।  আমরা এই হিষ্ট্রির সাক্ষী হয়ে রইলাম।

‘এমআর-৯’ মুক্তির আর  ২ দিন বাকি। ফলে প্রচারে বিস্তর সময় দিচ্ছেন ‘এমআর-৯’ সিনেমার সদস্যরা। হলিউড থেকে উড়ে এসেছেন নির্মাতা, অভিনয়শিল্পীরা; সঙ্গে দেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তো আছেনই। দলেবলে বিভিন্ন আয়োজনে হাজির হয়ে বলছেন  ছবিটির পেছনের গল্প, অভিজ্ঞতার বয়ান।

মঙ্গলবার রাতে শেরাটনে ছিলো এমনই একটি অনুষ্ঠান প্রেস মিট। এতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও আমেরিকার শিল্পীরা কথা বলেন। উপস্থাপন করেন জাজের কর্নধার আব্দুল আজিজ ও নবাগতা অভিনেত্রী আলীশা ইসলাম। আব্দুল আজিজ জানান, ইংরেজি ভার্সনে  ২৫ আগষ্ট বাংলাদেশের ১৮ টি সিনেপ্লেক্সে ছবিটি মুক্তি পাবে। বাংলা ভার্সন সেন্সর হলে সারাদেশে আগামি সপ্তাহে মুক্তি দেওয়া হবে। আর আমেরিকা ও কানাডা একই দিনে প্রায় ১৬০টি থিয়েটারে ছবিটি মুক্তি পাবে।

বিখ্যাত ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের প্রথম বই ‘ধ্বংসপাহাড়’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘এমআর-৯’ : ডু অর ডাই।   এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নিকো ফস্টার। যিনি মূলত প্রযোজক হিসেব হলিউডে কাজ করেন। তবে টুকটাক অভিনয়েও তাকে পাওয়া যায়। তিনিও কথা বলেন।

নিকো বলেন, ‘এতে আমি সিআইএ এজেন্ট টেইলরের চরিত্রে কাজ করেছি, যে মাসুদ রানাকে নিয়োগ দেয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য। আমি ভাগ্যবান, এই ছবিতে অভিনয় করতে পেরেছি, সেই সঙ্গে আমি কিন্তু ছবির একজন প্রযোজকও।

এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন  শহীদুল আলম সাচ্চু, আনিসুর রহমান মিলন, আলিশাহ ইসলাম, জেসিয়া ইসলাম, টাইগার রবি, মাইকেল জেই হোয়াইট, ম্যাট পাসমোর, ওলেগ প্রাডিউস, কেলি গ্রেসন প্রমুখ। সিনেমার চিত্রনাট্য করেছেন পরিচালক আসিফ আকবর, আব্দুল আজিজ ও নাজিম উদ দৌলা। প্রযোজনায় জাজ মাল্টিমিডিয়া, আল ব্রাভো ফিল্মস ও চেজিং বাটারফ্লাইস পিকচারস।বাংলাদেশি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া।

জানা যায়, কাজী আনোয়ার হোসেনের ‘ধ্বংস পাহাড়’-এর ওপর ভিত্তি করে রচিত এমআর-৯-এর চিত্রনাট্যে আসিফ আকবর সহ-লেখকরা ছিলেন আবদুল আজিজ ও নাজিম উদ দৌলা। সঙ্গীত ও স্কোরের দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় সঙ্গীতজ্ঞ রিকি কেজ, যিনি সঙ্গীতের জন্য তিনবার গ্র্যামি পুরস্কার জিতেছেন। চিত্রগ্রহণে ছিলেন মার্কিন পরিচালক ও চিত্রগ্রাহক মার্ক ডেভিড। সার্বিক সম্পাদনার কাজ আসিফ নিজেই করেছেন।

৮৩ কোটি টাকা বাজেটের ছবিটি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রযোজনায়। প্রযোজনা গ্রুপে আসিফের পাশাপাশি ছিলেন আল ব্রাভো, হেমডি কিওয়ানুকা, কলিন ব্যাটস, ফিলিপ ট্যান এবং আব্দুল আজিজ। নির্বাহী প্রযোজনায় ছিলেন পিটার নগুয়েন, নিকো ফস্টার, ফিলিপ বি গোল্ডফাইন, এবং এডুয়ার্ড ওসিপভ।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news