সাকলায়েন ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার: পরীমণি

২০২১ সালের শেষ দিকে সামাজিক মাধ্যমে পরীমণি ও তৎকালীন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) গুলশানে বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েনের কিছু ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পরে। যা নিয়ে পুরো দেশ জুড়েই আলোচনা সমালোচনার মুখে পড়েন তারা। গুঞ্জন ওঠে পরী ও সাকলাইনের অনৈতিক সম্পর্কের। এরপর সিসিটিভি ফুটেজেও সাকলায়েনের সরকারি বাসভবন রাজারবাগের মধুমতির ফ্ল্যাটে পরীমণির যাতায়াতের প্রমাণ পাওয়া যায়। 

এসব ঘটনা সামনে আসার পর প্রথমে গোলাম সাকলায়েনকে ডিবি থেকে সরিয়ে মিরপুরের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তাকে ঝিনাইদহ ইনসার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হয়েছিলো। এবার তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অর্থ্যাৎ পরীমণির সঙ্গে প্রেমকাণ্ডের জেরে চাকরি হারাতে বসেছেন গোলাম সাকলায়েন। 

ঘটনার শুরু থেকে দীর্ঘ আড়াই বছরের বেশি সময়েও সাকলায়েন কিংবা পরীমণি, দুজনার কেউই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি। এবার সামলায়েনের চাকরি হারানোর খবরে দেশের একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পরীমণি বলেছেন ‘সাকলায়েন ব্যাক্তিগত আক্রশের শিকার’। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি এই কথাটি পাঁচবারের বেশি বলেছেন। সূত্র: প্রথম আলো

সাক্ষাৎকারে পরীমণি বলেন, ‘আমি বা সাকলায়েন বলার আগে তো পাবলিকই এটা নিয়ে বলছে। প্রশাসনও এটা নিয়ে বলছে। এটা কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে এখনো আসেনি, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যদি আসে, তখন আমি কথা বলব। বলতে গেলে তো অনেক কথাই আসবে। অল্প কথায় সব বলা যাবে না। বললে, পুরো ঘটনা নিয়ে বলতে হবে। পুরোটা বলার মতো পরিস্থিতি আমার এখনো আসেনি।’

অভিনেত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্তও আমাদের সম্পর্কটা মানুষের কাছে পরিষ্কার নয়। আমরা প্রেমে ছিলাম, নাকি কী করছি, কোনো কিছুই তো পরিষ্কার নয়। এটা না সাকলায়েনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, না আমার কাছে। তবে যদি এ রকম মনে হয়, আমাকে অপরাধী বানাচ্ছে, তারপর আমি কথা বলব। আমার মনে হয় না, সে (সাকলায়েন) কোনোরকম এ ধরনের কথা বলবে। কারণ, পুরো বিষয়টির মধ্যেই আমি নেই। কারও হয়তো কোনো ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে সাকলায়েনের সঙ্গে এমনটা হচ্ছে, এটা হলে সে দোষ তো আর আমি নেব না।’

সাকলায়েনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে পরীমণি বলেন, ‘এই সম্পর্কটা কী, তা নিয়ে কেউ এর আগে কিছু জিজ্ঞেস করেনি। তার আগেই তো এত অপবাদ, এত কিছু...। আমার মনে হয় না এটার আর কোনো দরকার আছে। যেমন আছে না, কোনো একটা প্যাঁচ লাগছে, প্যাঁচটা খুলি। এখানে প্যাঁচ লাগারও কিছু নেই, খোলারও কিছু নেই, তাই শুধু শুধু কেন কথা বলব। আমার শুধু মনে হয়, সাকলায়েন ব্যক্তিগত আক্রোশের মধ্যে পড়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে রিমান্ডে কী করেছে, এটাও কেউ কখনো জানতে চায়নি। আমি এটা নিয়েও কথা বলব না। আমি জানি না, যখন বলব তখন যে কী হবে। তবে সাকলায়েনের জন্য খারাপ লাগছে, সে ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার! প্রেম-ভালোবাসা যা-ই হোক না কেন, এটা শুধু একটা অদ্ভুত কারণ হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। আবারও বলছি, আমার মনে হয়, সে অন্য কোথাও ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার।’

সাকলায়েন কার ব্যক্তিগত আক্রোশ শিকার? এমন প্রশ্নের উত্তরে পরী বলেন, ‘আমি জানি না। তবে অবশ্যই ব্যক্তিগত আক্রোশ...কিন্তু এমনটা নয়, প্রেম-ভালোবাসা ও সম্পর্কের কারণে হয়েছে, তা আমি বিশ্বাস করি না। সাধারণত যে ট্যালেন্ট, সফল হয়-তার পেছনে অনেকেই লেগে থাকে। এটা নতুন কিছু না। নিঃসন্দেহে সাকলায়েন একজন ট্যালেন্ট ও সফল মানুষ, ওর পেছনেও অনেকে হয়তো লেগেছিল। তার এখনকার বরখাস্ত হওয়ার ব্যাপারটা খুবই অদ্ভুত। এটা খুবই অ ন্যায় হয়েছে। সাকলায়েনের প্রতি নিঃসন্দেহে অন্যায় হয়েছে।’সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি 

news