চলতি বছরের অক্টোবরে চলচ্চিত্র অভিনেতা, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিবিদ মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে দলটির নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলাদেশ ইনসাফ পার্টি’ (বিআইপি), যাদের লোগোতে শোভা পেয়েছে শান্তির প্রতীক পায়রা। গত ৩ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বর্ষীয়ান এই অভিনেতার সভাপতিত্বে দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকেই রাজনীতিতে সোহেল রানার পদার্পণ নিয়ে আলোচনা চলছে।
তবে এরই মধ্যে ভক্তদের সতর্কবার্তা দিলেন অভিনেতা। জানালেন, তার নাম ব্যবহার করে একধরনের প্রচার চালানো হচ্ছে। যেটির সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট নন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডি থেকে একটি পোস্ট করেন এ বর্ষীয়ান অভিনেতা।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমাকে প্রধান অতিথি করে একটি নতুন পার্টি আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে, এমনি ধরনের একটি দাওয়াত নেওয়া অনেকের কাছে পৌঁছেছে। আমি তাদের সবার জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই, এমন কোনো দাওয়াত আমি গ্রহণ করিনি অথবা উক্ত পার্টির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অনেকেই হয়তো ভুল বুঝতে পারেন, সে কারণে সবাইকে জানান দেওয়া।’
সোহেল রানার পোস্টে মন্তব্য করেছেন অনুরাগীরা।
একজন লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ ভাইয়া, অনেক পোস্ট হয়েছে আমিও দেখেছি কিন্তু আপনার আইডি থেকে পোস্ট হয়নি তাই সেটা ভুয়া।’ অপর একজন লিখেছেন, ‘আপনি একজন সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা। আপনাকে সালাম। ডোরা কাটা দাগ দেখে বাঘ চিনা যায়।’
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন সোহেল রানা।
ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে পড়ার সময় ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। ১৯৬৫ সালে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সহকারী সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৬৮ সালে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে ইকবাল হলের ভিপি নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৯ সালে আকস্মিকভাবে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করেন সোহেল রানা। দলটির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্বাচনী উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালের অক্টোবরে জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন এই চিত্রনায়ক। এদিকে জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু হলে ছাত্র-জনতার পক্ষে অবস্থান নেন তিনি।
বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ সিনেমার প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন সোহেল রানা। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।