পরিচালক নাসিম সাহনিকের বিরুদ্ধে এবার অভিযোগ নায়িকা শিরিন শিলার

নায়িকা রাজ রিপার পর এবার শিরিন শিলা অভিযোগ করলেন। ছবি একটিই। সেটা হলো নাসিম সাহনিক পরিচালিত ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ’। এর আগে তিনি ‘গোয়েন্দাগিরি’ নামে একটি ছবি নির্মাণ করেছেন। জানা যায়, কুয়াকাটার লোকেশনে পাঁচ দিনের শুটিং শিডিউল ছিল। ১৯ ডিসেম্বর দিবাগত ভোররাতে গিয়ে ইউনিট সেখানে পৌঁছায়। যাওয়ার পর থেকে শুটিং ইউনিটে অগোছালো অবস্থা নজরে আসে শিল্পীদের। নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া -  সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল বলে তাদের দাবি। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়।

এ ধরনের অগোছালো পরিস্থিতি দেখে অভিনেতা কচি খোন্দকার এবং অভিনেতা মুকিত জাকারিয়া নিজেদের খরচে অন্য একটি হোটেলে গিয়ে উঠেন। শিরীন শিলা বলেন, ‘যাওয়ার পর  যে হোটেলে রাখা হয়েছিল আমাদের, বিশ্বাস করবেন না, ঠিকমতো পানি ছিল না। রুমের অবস্থাও খারাপ ছিল। খাবারও মানসম্মত ছিল না। প্রথম দিন থেকেই নাকি বাজেট সমস্যা। পাঁচ দিনের শিডিউলের কথা বলা হয়েছিল। কোনোমতে দুই দিন শুটিং করে ঢাকায় ফিরছিলাম আমরা।’

শিরিন শিলার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় নায়ক আরজুর কথায়। তিনি লোকেশনে যাননি। কারণ তাকে চুক্তি অনুসারে সাইনিং মানি দেননি। তাকে একটি ছোট চেক দেওয়া হয়েছিল। সেটিও বাউনচ হয়েছে। সেজন্য ছবিটি হবে না মনে করে তিনি আর লোকেশনে যাননি। এর আগে এই ছবিটির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু চুক্তির অর্থ নিয়ে গড়িমসি করায় তিনি ছবিটি ছেড়ে দেন। পরে থানায় জিডিও করেছেন তিনি।  

শিরিন শিলা বলেন, ‘ফেরার পথে আমাদের জন্য দুটি মাইক্রোবাস ও ইউনিটের জিনিসপত্র বহনের জন্য একটা পিকআপ ভ্যান ছিল। দুপুরে রওনা দিয়ে বরিশাল এসে পৌঁছাতে রাত আটটা বেজে যায়। আমাদের সঙ্গে পরিচালকও ছিলেন। মাইক্রোর ড্রাইভার পথে গাড়ির তেল কেনা, ব্রিজের টোলের টাকা চাইলে পরিচালক দিতে পারেননি। গাড়িও বরিশাল থেকে আর ছাড়তে চাননি ড্রাইভার। একটা সময় পরিচালক আমাদের রেখে পালিয়ে যান। পরে ছবির এক শিল্পী ঢাকায় ফোন করে তার কোনো এক আত্মীয়ের কাছ থেকে বিকাশে টাকা নিয়ে আমরা ঢাকাতে ফিরতে পেরেছি। তবে পথে যে কষ্ট করেছি আমার সিনেমার জীবনে এমন ঘটেনি।’

কচি খন্দকার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুটিং ইউনিট থেকে আমাদের যে হোটেলে রাখা হয়েছিল, হোটেল পছন্দ হয়নি। তাই আমি, মুকিত জাকারিয়া, মুসাফির বাচ্চু, পর্যটন হোটেলে গিয়ে উঠি। থাকা, খাওয়া—সবই নিজ খরচে করেছি আমরা। শুটিংয়ের দুই দিনের মাথায় আমরা চলে আসি।’ পরে পরিচালক কোনো যোগাযোগ করেছেন কি না, জানতে চাইলে এই অভিনেতা বলেন, ‘না, এখনো যোগাযোগ করেননি। এই ছবিতে আদৌ আর কাজ করা হবে কি না, বলা মুশকিল।’

শুটিং ইউনিট নিয়ে ফেরার পথে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে পরিচালক নাসিম সাহনিক বলেন, ‘মাইক্রোচালক ঢাকায় ফেরার আগেই বরিশালে এসে পুরো ভাড়া বুঝে নিতে চেয়েছেন। এসব কারণে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তা ছাড়া বরিশালে এসে আমি একটু অসুস্থ বোধ করি। পরে সহকারীকে সেখানে রেখে আমি অন্যভাবে ঢাকাতে ফিরেছি। আমি পালিয়ে আসিনি। আমার ফোনও বন্ধ ছিল না। ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমার বাসা থেকেও ফোন করে আমাকে পাওয়া যায়নি। তবে যাই কিছু হোক না কেন, খুব শিগগিরই সব ঠিক হয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা খুব তাড়াতাড়িই একটা সংবাদ সম্মেলন করব।’

এনবিএস/ওডে/সি

news