জ্ঞানবাপীতে শিবলিঙ্গ রক্ষা করতে হবে, মুসলিমদের প্রার্থনাও চলবে, বলল সুপ্রিম কোর্ট

জ্ঞানবাপী মসজিদ (Gyanvapi Mosque:) চত্বরে কুয়োতে পাওয়া শিবলিঙ্গ সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, শিবলিঙ্গের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে মুসলিমদের প্রার্থনা এবং অজু (নমাজ পড়ার আগে নিজেকে পরিচ্ছন্ন করা) করতে সমস্যা না হয় সেটাও দেখতে হবে।
আদালত ফের আগামী বৃহস্পতিবার ওই মামলা শুনবে।

এদিকে, এদিনই বারাণসীর নিম্ন আদালত সমীক্ষা রিপোর্ট পেশের জন্য আরও দু দিন সময় দিল সমীক্ষক দলকে। তবে ওই দলের একজন আইনজীবী সদস্যকে আদালত সরিয়ে দিয়েছে। তাঁর উপর মসজিদ চত্বরে ভিডিওগ্রাফি করার নির্দেশ ছিল।

গত বৃহস্পতিবার বারাণসীর আদালতের সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় মসজিদ (Gyanvapi Mosque:) কর্তৃপক্ষ। তাদের তরফে প্রধান বিচারপতি এমভি রামানার বেঞ্চে আর্জি জানানো হয়, নিম্ন আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে সমীক্ষার কাজ বন্ধ করে দিক সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু প্রধান বিচারপতি রামানা স্থগিতাদেশ না দিয়ে মামলা দ্রুত শুনবে বলে জানায়। আজ বিকেলে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি এসওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে।

বারাণসীতে বিতর্ক, বিবাদের মুলে মসজিদ এলাকায় থাকা হিন্দু মন্দিরে সারা বছর পুজো করার অনুমতি চেয়ে মামলা। সোমবার সেখানে আর একটি মামলায় নিম্ন আদালত মসজিদ চত্বরে থাকা কুয়োটি ব্যবহারে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

আদালতের নির্দেশে চলা সমীক্ষা চলাকালে কুয়ো থেকে একটি শিব লিঙ্গ উদ্ধার হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। আজ সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়টিও পর্যালোচনায় আসে।

জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে বিতর্ক কেন?

মসজিদ কমিটির আশঙ্কা, সমীক্ষার পর মসজিদ চত্বরে (Gyanvapi Mosque:) হিন্দুদের বছরভর পূজার্চনার অনুমতি দেওয়া হবে। মসজিদ কমিটির তরফে আইনজীবী হাফেজা আহমেদি আগের দিন সুপ্রিম কোর্টে বলেন, ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল (বিশেষ বিধান) আইনের ৪ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা আছে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টে যে উপাসনাস্থল যে অবস্থায় ছিল, সেই অবস্থাই বহাল থাকবে। অবস্থান এবং ব্যবহারগত পরিবর্তন করা যাবে না। জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার উদ্দেশ্য ওই আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কারণ, ওখানে হিন্দুদের সারা বছর পূজা করার অনুমতি চেয়ে মামলা হয়েছে। সেই আর্জি মেনে নিম্ন আদালত পদক্ষেপ করছে। নিম্ন আদালত মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার কাজের ভিডিও করার অনুমতি দেয়। মুসলিম পক্ষের বক্তব্য, মসজিদ হল ওয়াকফ সম্পত্তি। সেখানে আদালতের তরফে ভিডিও করার অনুমতি বেআইনি নির্দেশ।

মূল মামলাটি করেছেন পাঁচ মহিলা। তারা গত বছরের মাঝামাঝি স্থানীয় আদালতে আবেদন করেন, জ্ঞানবাপী মসজিদ চত্বরে থাকা ছোট হিন্দু মন্দিরটিতে তাঁদের সারা বছর পুজাপাঠের অনুমতি দেওয়া হোক। এখন বছরে একবার সেই সুযোগ মেলে। সংবিধানে উল্লেখিত ধর্মীয় অধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করে তাঁরা দাবি করেছেন, মন্দিরে পুজোপাঠ হিন্দুদের অধিকারের মধ্যে পড়ে।

সুপ্রিম কোর্ট আজ জানিয়েছে, মূল মামলা, নিম্ন আদালতের নির্দেশ ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। ততদিন পর্যন্ত মসজিদে মুমলিমদের প্রবেশে কোনও বাধা সৃষ্টি করা যাবে না।খরব দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে

news