তবে এই অন্ধকার ভয়ের নয়, সাহস যোগানোর ! কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে রাত দখলে নামলো রাজ্যবাসী।
গত ৯ আগস্ট আরজিকর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় নৃশংস অত্যাচার নেমে এসেছিল ওই ডাক্তারি ছাত্রীর উপর। এরপর থেকেই ন্যায়বিচারের দাবিতে রাজ্যজুড়ে টানা আন্দোলন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চলে আসছে। এরই মাঝে গত ১৪ আগস্ট রাত দখলে নেমেছিল নারীরা। কিন্তু প্রতিবাদের নিরিখে তাকেও যেন হার মানালো বুধবারের রাত।
কলকাতা থেকে বহরমপুর, বাঁকুড়া থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা- আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ রাজ্যবাসীর। রাত ৯ টা থেকে ১০টা- রাস্তার আলো, ঘরের আলো, ফ্ল্যাটের আলো, দোকানের আলো নিভিয়ে মোমবাতি ও প্রদীপ হাতে রাস্তায় নামলেন অসংখ্য মানুষ। কেউ আবার মশাল জ্বালিয়ে এগিয়ে চলেছেন সামনের দিকে! সব মানুষের এক স্বর, জাস্টিস ফর আরজিকর। তবে এক ঘণ্টার এই সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকলেও ১০টা পেরিয়েও চলল আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ। রাত যত গড়িয়েছে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা তত বেড়েছে। গান, কবিতা আবৃত্তির পাশাপাশি চলল স্লোগান। কোথাও 'দড়ি ধরে মারো টান, রানী হবে খান খান', কোথাও আবার 'দাবি এক দফা এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ',- এই দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠলো আকাশ বাতাস।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নাটাগড়ের বাসিন্দা সেই নির্যাতিতার পাড়ায় আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ করেছে স্থানীয় মানুষরা। কলকাতার গার্ডেনরিচে মশাল হাতে গান গেয়ে প্রতিবাদ স্থানীয়দের। প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে মানববন্ধন হয় বহরমপুরে। বাঁকুড়ার মশাল হাতে রাত দখলে নামে নারীরা। সল্টলেকের বিভিন্ন আইল্যান্ডে মোমবাতি হাতে নিয়ে কোথাওবা মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে রাস্তায় নামেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। সুবিচার চেয়ে বিমানবন্দর ১ নম্বর গেটে মানববন্ধন করে নাগরিক সমাজ। এছাড়াও কৃষ্ণনগর, বর্ধমান, বারাসাত, বেহালা- সর্বত্র প্রতিবাদের ভাষা ছিল গান, পথনাটিকা। এমনকি কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে রাজভবন- আলো নিভিয়ে প্রতিবাদ জানালো সেখানেও। আর যারা ঘর ছেড়ে বেরোতে পারেননি তারা বাড়িতেই মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হলেন।