বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কলকাতা বিমানবন্দরে কোনও বিমান ওঠানামা করবে না বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আজ সন্ধ্যা থেকে ১৬ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দেওয়া বিবৃতি উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। যাত্রীদের যাতে কোনও রকম সমস্যার মুখে পড়তে না হয়, তাই আগেভাগেই বিমান বাতিলের কথা ঘোষণা করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইতোমধ্যেই ৫৫২টিরও বেশি এক্সপ্রেস এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেল বাতিল করেছে ১৫০টি ট্রেন। ইস্টকোস্ট রেল বাতিল করেছে ১৯৮টি। পূর্ব রেল ২০০টিরও বেশি এবং দক্ষিণ-পূর্ব-মধ্য রেল বাতিল করেছে ১৪টি ট্রেন।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় দানা ভারতের ওড়িশায় সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে আঘাত হানার পর পশ্চিমবঙ্গের দিকে যাবে।
আজ (বৃহস্পতিবার) বার্তাসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, “গতকাল (বুধবার) মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় দানা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় এবং উত্তর-উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের দিকে সরে আসে। দুপুরে ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।”
তিনি আরও বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবটি পড়বে ওড়িশায়। এরপর যাবে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় বিভাগগুলোতে। কিন্তু উপকূলে আঘাত হানার পর এটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে সরে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে করে দক্ষিণ ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। আমরা সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিচ্ছি।”
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে ওড়িশায় প্রথম আঘাত হানবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সময় এটির বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে।
ভারতের ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতেও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আজ রাতের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাতে তিনি নিজেই নবান্নে থেকে গোটা পরিস্থিতিতে নজর রাখবেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানান তিনি। সেইসঙ্গে যাবতীয় প্রয়োজনীয় সতর্কতার কথা মনে করিয়ে দেন সকলকে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীকে ভয়ে না থেকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'আতঙ্কে থাকবেন না, কোনও গুজবেও কান দেবেন না। সতর্ক থাকুন। পুলিশের পক্ষ থেকে যে জায়গা খালি করতে বলা হচ্ছে সেখানে একটি রাতের মতো মান্যতা দিন।
পার্সটুডে