সিন্ধু নদীর পানি নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের উত্তেজনা এখন আরও এক ধাপে এগিয়েছে। ছয় দশকের পুরনো সিন্ধু পানি চুক্তি (IWT) থেকে ভারত একতরফাভাবে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলে ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দেয়—পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে তা যুদ্ধের শামিল হবে।

চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু অববাহিকার ছয়টি নদীর মধ্যে তিনটি পশ্চিম নদীর পানি পাকিস্তানের জন্য সংরক্ষিত। ভারত শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করতে পারলেও পানি প্রবাহে হস্তক্ষেপ করতে পারত না। কিন্তু বর্তমানে ভারত চেনাব ও ঝিলাম নদীর ওপর একাধিক বাঁধ নির্মাণ করছে, যার বিরোধিতা করে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে গিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতায় নদীর সম্পূর্ণ প্রবাহ থামানো সম্ভব নয়। তবে শীতকালে অল্প পরিবর্তনেও পাকিস্তানের কৃষি ও পানি নিরাপত্তায় বিপর্যয় নামতে পারে। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরবে, প্রয়োজনে সামরিক প্রতিক্রিয়াও বিবেচনায় রাখা হবে।

পাকিস্তানে পানি সংরক্ষণের অবকাঠামোও দুর্বল। বর্তমানে তাদের তিনটি বড় জলাধার রয়েছে, যা সর্বোচ্চ চার সপ্তাহের পানি মজুদ রাখতে পারে—যা আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় অনেক কম। দুইটি নতুন বাঁধ নির্মাণাধীন থাকলেও তা ২০২৮ সালের আগে সম্পূর্ণ হবে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার দক্ষিণ এশিয়ায় একটি বিপজ্জনক নজির তৈরি করবে। পাকিস্তান সরকার বলেছে, "২৫ কোটির জীবনরেখা—সিন্ধু নদীর প্রবাহ রোধ করা মানেই যুদ্ধ ঘোষণা।"

এখন প্রশ্ন, পানি সংকট নিরসনে নতুন কোনো আলোচনার দরজা খুলবে কি, নাকি দুই পারমাণবিক শক্তির মধ্যে সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যাবে?

news