বিহারের দরভাঙা জেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় স্তব্ধ গোটা এলাকা। নিজের মেয়ের সামনেই জামাইকে গুলি করে হত্যা করেছেন বাবা! প্রেম করে বিয়ে করায় ২৫ বছর বয়সী নার্সিং ছাত্র রাহুল কুমারকে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার শ্বশুর প্রেমশঙ্কর ঝার বিরুদ্ধে।

কী ঘটেছিল সেই ভয়াল দিনে?
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দরভাঙা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ডিএমসিএইচ) ক্যাম্পাসে ঘটে যায় এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড। রাহুলের স্ত্রী তন্নু প্রিয়ার বর্ণনায় উঠে এসেছে ভয়াবহ সেই দৃশ্য:

"কলেজ থেকে ফিরে দেখি, আমার স্বামী মোটরসাইকেলের পাশে দাঁড়িয়ে। হঠাৎ আমার বাবা এসে বন্দুক তাক করে জিজ্ঞেস করেন, 'এই বাইকটা কার?' রাহুল উত্তর দিতেই আমার চোখের সামনে বাবা তার বুকে গুলি করেন! রাহুল আমার দিকে ছুটে এসে কাঁধে ঢলে পড়ে... হাসপাতালে নেওয়ার পথেই সে মারা যায়।"

প্রেমের বিয়েই কি কারণ?
তন্নু ও রাহুল গত এপ্রিলে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। তন্নু অভিযোগ করেছেন, "আমার পরিবার এই বিয়ে মেনে নেয়নি। বাবা আগেও আমাকে মারধর করেছেন, রাহুল আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এখন প্রতিশোধ নিয়েই তাকে হত্যা করা হয়েছে।"

হত্যার পর কী হলো?
গুলির শব্দ শুনে লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং প্রেমশঙ্করকে মারধর শুরু করে।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাহুলের মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়।

ছাত্ররা প্রতিবাদে হাসপাতাল অবরোধ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

পারিবারিক শত্রুতাই কি মূল কারণ?
রাহুলের বাবা রমেশ মণ্ডল জানান, "প্রেমশঙ্কর আগে থেকেই হুমকি দিচ্ছিলেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও করেছিলেন।"

অন্যদিকে, প্রেমশঙ্কর ঝার দাবি:

রাহুল তন্নুকে "অপহরণ" করে বিয়ে করেছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রাহুলের পরিবার তাকে মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়েছে।

পুলিশ কী বলছে?
দুটি মামলার তদন্ত চলছে (একটি রাহুলের হত্যা নিয়ে, অন্যটি প্রেমশঙ্করের অপহরণের অভিযোগ নিয়ে)।

প্রেমশঙ্কর ও তার পরিবারের চার সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।

সমাজের কঠোর প্রশ্ন
এই ঘটনা আবারও উসকে দিয়েছে বর্ণপ্রথা ও সম্মান রক্ষার নামে হিংসার debate। প্রেমের স্বাধীনতা নাকি পারিবারিক সম্মান— কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

আপনার মতামত জানান কমেন্টে!

 

news