প্রিন্টার থেকে বেরোচ্ছে রকেট! বিশ্বের প্রথম থ্রি-ডি প্রিন্টেড মহাকাশযান উড়ল আকাশে
ডিজিটাল বিজ্ঞানের যুগে সবই সম্ভব। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বছরের পর বছর চেষ্টা করে আস্ত একটা রকেট বানানোর ঝক্কি আর নিতে চাইছেন না বিজ্ঞানীরা। যেসব রকেট আছে তার প্রিন্ট আউট নিয়ে নিলেই হল! থ্রি ডি প্রিন্টার থেকেই তৈরি হয়ে যাবে একদম আসলের মতো মহাকাশান। বহু বছরের চেষ্টায় এই কাজে সাফল্য এসেছে। বিশ্বের প্রথম থ্রি ডি প্রিন্টেড রকেট তৈরি করে ফেলেছে রিলেটিভিটি স্পেস (Relativity Space)। এই রকেটের উৎক্ষেপণও সফল হয়েছে। তবে সমস্যা হয়েছে অন্য জায়গায়। রকেটটি আকাশে উড়ে বহুদূর গেলেও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের মায়া কাটাতে পারেনি। পৃথিবীর কক্ষে রকেটটিকে পাঠানোই লক্ষ্য ছিল বিজ্ঞানীদের। তবে তা সফল হয়নি। উৎক্ষেপণের কিছু সময় পরেই সেটি থেমে যায়।
থ্রি ডি প্রিন্টেড এই রকেটের নাম টেরান ১ ( Terran 1 ) । ১১০ ফুট লম্বা, চওড়ায় ৭.৫ ফুট। রকেটের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ থ্রি ডি পিন্টারে তৈরি। সেগুলো পর পর জুড়েই রকেটটি তৈরি হয়েছে। রকেট নির্মাণকারী সংস্থা রিলেটিভিটি স্পেস জানিয়েছে, তিনবারের চেষ্টায় সফলভাবে এই রকেট উৎক্ষেপণ করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু অরবিটে বা পৃথিবীর কক্ষে (Earth Orbit) রকেটটি পৌঁছতে পারেনি।
গবেষকেরা জানান, থ্রি ডি ছাপার যন্ত্রে কোনও ত্রিমাত্রিক বস্তুর হুবহু প্রতিলিপি তৈরি করা যায়। এই থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক মুদ্রণে কাগজ কিংবা কাপড় লাগে না। ছাপা বলতে কাগজের উপর সারি সারি অক্ষরমালাও নয়। এমন ছাপা যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থও, উচ্চতা আছে। রকেটের ৮৫ শতাংশ হল থ্রিডি প্রিন্টেড। এই রকেটের মুভিং পার্ট যেমন রবারের সিল, কম্পিউটার, ইলেকট্রিকাল সার্কিট, রকেট বডি, রকেটের সামনের নোজ কোণ এলাকায় যুক্ত অন্যান্য অংশ, ইন্টারনাল প্রোপেল্যান্ট ট্যাঙ্ক থ্রি ডি প্রিন্টারে তৈরি।
পৃথিবীর খুব কাছে মেঘে ঢাকা রহস্যময় গ্রহ দুই তারাকে ঘিরে পাক খাচ্ছে, ক্ষণে ক্ষণে বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা চাঁদে বাড়ি বানানোর জন্যও থ্রি ডি প্রিন্টারের সাহায্য নিতে চলেছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইট-বালি-সিমেন্ট, কিছুই নিয়ে যেতে হবে না পৃথিবী থেকে। বাড়ি বানাতে ব্যবহার করা হবে চাঁদেরই মাটি। আর এই কাজে লাগবে শুধু একটা থ্রি-ডি মুদ্রণ যন্ত্র (প্রিন্টার)। সেটি অবশ্য এই গ্রহ থেকেই মহাকাশযানে চাপিয়ে পাঠানো হবে চাঁদে। থ্রি ডি প্রিন্টারে লাগানো কম্পিউটারে থাকবে চাঁদের বাড়ির বিভিন্ন অংশের নকশা। কালি হিসেবে ব্যবহার করা হবে চাঁদের মাটি। কম্পিউটারের ‘প্রিন্ট’ অপশনে গিয়ে মাউস ক্লিক করলেই, ওই মাটির মিশ্রণ স্তরে স্তরে জমে চেহারা নেবে ঘনবস্তুর। তৈরি হবে বাড়ির এক একটা অংশ।
খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২৩ /একে