যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া হুঁশিয়ারি এরদোয়ানের

যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চরম শিক্ষা’ দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তিনি বলেছেন, তুরস্কের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ‘যুক্তরাষ্ট্রকে একটা শিক্ষা দেবে’ তার সরকার। তুরস্কের নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের প্রেক্ষিতে এই হুঁশিয়ারি দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।

তুরস্কে আগামী ১৪ মে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এদিন পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট উভয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে। ভোটারদের মন জয়ে সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা।

তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে নেমেছেন এরদোয়ান। তবে এবার আর সেই সুযোগ দিতে চায় না বিরোধীরা। এরদোয়ানকে উৎখাতে ছয় দলীয় জোট গড়েছে তারা।

প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন ‘তুরস্কের গান্ধী’ খ্যাত কামাল কিলিচদারোগলু। ৭৪ বছর বয়সী কামাল দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) চেয়ারম্যান।

নির্বাচনে এরদোয়ানবিরোধী জোটের প্রতি খোলাখুলিই সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহেই কামাল কিলিচদারোগলুর সঙ্গে একটি বৈঠক করেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেফরি ফ্লেক।

দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোতে তুর্কি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে ফ্লেক ওই সাক্ষাত করেন বলে মার্কিন দূতাবাসের এক টুইটে জানানো হয়।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে বৈঠক করায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওপর বেজায় ক্ষেপেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। গত রোববার (২ এপ্রিল) এক সভায় তার ওই বৈঠকের নিন্দা জানান এরদোগান। শুধু তাই নয়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফ্লেকের জন্য তার দরজা বন্ধ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মিডল ইস্ট মনিটর জানায়, এদিন তুরস্কের রক্ষণশীল গ্রে উলভস মুভমেন্টের একটি প্রতিনিধিদল এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাত করে। এ সময় তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেন তুর্কি নেতা।

এরদোয়ান বলেন, ‘এবারের নির্বাচনের মধ্যদিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চরম শিক্ষা দেয়া হবে। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের জন্য আমাদের দরজা বন্ধ হয়ে গেছে। তার আর আসার সুযোগ নেই। তার উচিত নিজের জায়গা কোথায় সেটা জানা।’

রাষ্ট্রদূত ফ্লেককে উদ্দেশ্য করে এরদোয়ান বলেন, ‘তিনি (ফ্লেক) জনাব কামালের সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেছেন। আপনার লজ্জা হওয়া উচিত। মগজ খাটিয়ে চিন্তা করুন। আপনি একজন রাষ্ট্রদূত। এই দেশে আপনার যোগাযোগের জায়গা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট।’

নির্বাচন সামনে করে গত কয়েক সপ্তাহে ওয়াশিংটন ও আঙ্কারা সম্পর্ক ক্রমেই অবনতি হয়েছে। গত মাসে সিরিয়ায় মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী প্রধান জেনারেল মার্ক মিলির গোপন সফরের খবর প্রকাশের পর তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রদূত ফ্লেককে তলব করে ওই সফরের কারণ জানতে চান।

এর কিছুদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাশিয়ায় রাসায়নিক সামগ্রী, মাইক্রোচিপ ও অন্যান্য পণ্য রফতানির বিষয়ে তুরস্ককে সতর্ক করে বার্তা দিলে তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমান সোইলু মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে কড়া ভাষায় তিরস্কার করেন।

জেফরি ফ্লেককে উদ্দেশ্য করে সোইলু বলেন, ‘তুরস্কের ওপর থেকে আপনার নোংরা হাত সরিয়ে নিন। আমি খুব স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি। আমি ভালো করেই জানি যে আপনি তুরস্কে ঝামেলা সৃষ্টি করতে চাইবেন। আপনার ওই দাঁত বের করা হাসি বন্ধ করুন।’

এনবিএস/ওডে/সি

news