ইউক্রেন যুদ্ধ অবসান চেষ্টায় চীনে ম্যাক্রোঁ ও ভন ডার লিয়েন

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে চাপ দিতে বেইজিং সফরে যাচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান ভন ডার লিয়েন।

চীন ইউরোপের মিত্রদেশগুলোর মধ্যকার ফাটলের ফায়দা নেয়ার চেষ্টায় থাকলেও ম্যাক্রোঁ এবং ভন ডার লিয়েন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বেইজিং যাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা একতারই বার্তা দেবেন। আজ বৃহস্পতিবার তারা বেইজিংয়ে পৌঁছবেন। ফ্রান্স এবং ইউরোপীয় কমিশনের দুই নেতার চীনে যৌথ সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ

সম্প্রতি জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও চীন সফর করেছেন। তাদের মতো ম্যাক্রোঁ এবং ভন ডার লিয়েনও ইউক্রেইন যুদ্ধ বন্ধে চীনকে তাগাদা দেয়ার পাশাপাশি বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার দেশটির সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাড়তে থাকা টানাপোড়েন দূর করারও চেষ্টা নেবেন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেন। মস্কো সফরে ইউক্রেন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেিিছলেন তিনি। ফলে চীনে সঙ্গে আলোচনায়ও তিনি কৌশলী একজন গুড কপ নেতার মতো ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন।

ফ্রান্সের এলিসি প্রাসাদের এক মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে চীনের দেয়া প্রস্তাবে একমত হওয়ার মতো কিছু বিষয় ম্যাক্রোঁ খুজে পেয়েছেন।

তবে ব্রাসেলস থেকে চীন সফরের ক্ষেত্রে ভন ডার লিয়েনকে কেউ কেউ ‘ব্যাড কপ’ বলছেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে তার দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে এবং নেটোর অবস্থান নিয়ে তিনি সোচ্চার। ফলে চীন সফরে এর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা আছে।

কয়েকদিন আগেই ভন ডার লিয়েন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করে চলার জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শি’র কড়া সমালোচনা করে বক্তব্য রেখেছিলেন। চীনের ১২ দফা শান্তি প্রস্তাবও বাস্তবসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।

ম্যাক্রো এবং লিয়েন দুজনের চীনকে নিয়ে ইউরোপীয় চিন্তা-ভাবনায় স্পষ্টতই ভিন্নতা আছে, বলেছেন দ্য জার্মান মার্শাল ফান্ড থিংক ট্যাংক এর এন্ড্রু স্মল। সফরে ম্যাক্রোঁর সফরসঙ্গী থাকছেন অন্তত ৫০ জন সিইও বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। আর ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণেই চীনে যাচ্ছেন ভন ডার লিয়েন। চীন অবশ্য ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো সামরিক জোটকে দায়ী করে, এবং তারা বারবার জোর দিয়ে বলেছে এই যুদ্ধে তাদের কোনও ভূমিকা নেই। চীনে ফ্রান্সের ব্যাপক অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। ২০২২ সালে দুই দেশের বাণিজ্য প্রথমবারের মত ১০ হাজার কোটি ইউরো ছাড়িয়ে গেছে যা তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি।

চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে উরসুলা ভন ডার লিয়েন ও ম্যাক্রোঁ চীন সফরের প্রস্ততি হিসেবে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে প্যারিসে বৈঠকে মিলিত হন।

এনবিএস/ওডে/সি

news