যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: মার্কিন কংগ্রেসে মোদি

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) যুক্তরাষ্ট্রে পৌছানোর পর ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।  বিশেষ আমন্ত্রণে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক প্রটোকল নিয়ে মোদি এই রাষ্ট্রীয় সফর করছেন। বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দ্বিতীয়বারের মতো ঐতিহাসিক ভাষণ  দেন তিনি। এসময় বলেন, এখানে দ্বিতীয়বার বসা আমার জন্য ব্যতিক্রমী গুরুত্বের বহি:প্রকাশ। এই সফরের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আমাদের সম্পর্কের নতুন ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়েছি যা কেবল আমাদের দুই দেশেরই নয়, বিশ্বের ভাগ্যকেও নতুন রূপ দেবে।

মোদির দীর্ঘ বক্তব্যে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক, নারী অধিকারসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়। এছাড়াও তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক বেগবানে গুরত্বারোপ করেন।

অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, ‘ইউএস কংগ্রেসে ভাষণ দেওয়া সর্বদা একটি বড় সম্মানের বিষয়। এটি দুবার করা একটি ব্যতিক্রমী বিশেষত্ব। এই সম্মানের জন্য, আমি ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ভারতীয়র পক্ষ থেকে আমার গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। । আমি দেখছি যে ২০১৬ সালে আপনাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক এখানে ছিল। আমি পুরানো বন্ধুদের সাথে অর্ধেক নতুন বন্ধুদের মধ্যেও একই উৎসাহ দেখতে পাচ্ছি’।  

তিনি বলেন, আমাদের পথচলা একই সূত্রে গাথা, এই দীর্ঘ পথচলায় আমরা একে অপরের পরিক্ষিত বন্ধু হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছি।

বক্তব্য প্রদানকালে গোটা হলে, ‘মোদি, মোদি.....’ বলে স্লোগান দিতে থাকে সমর্থকরা। এসময় দুই দুইবার দাঁড়িয়ে মোদির উদ্যেশ্যে সম্মান প্রদর্শন করেন সদস্যরা।

মোদি তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই (আর্টিফেসিয়াল ইন্টেলিজেন্স) এর অগ্রগতি আমরা দেখতে পাচ্ছি । পাশাপাশি আরেকটি এআই যারা বিভিন্নখাতে সমানতালে উন্নয়নের ধারা বজার রেখেছে তা হলো আমেরিকা-ইন্ডিয়া।

আমি যখন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলাম, তখন ভারত ছিল বিশ্বের দশম বৃহত্তম অর্থনীতি। আজ ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি। এবং ভারত শীঘ্রই তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হবে।

তিনি বলেন, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি শুধু উন্নয়ন নয় যা নারীদের উপকার করে। এটি নারীর নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন, যেখানে নারীরা অগ্রগতির যাত্রায় নেতৃত্ব দেয়।

ভারতে আবাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মোদি বলেন, বর্তমানে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিচ্ছি। প্রায় চল্লিশ মিলিয়ন বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি যা একশত পঞ্চাশ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। যা অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ছয়গুণ।

তিনি যোগ করেন, ইন্দো-প্যাসিফিকের স্থিতিশীলতা আমাদের অংশীদারিত্বের দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। যেখানে থাকবে সুরক্ষিত সমুদ্র পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও আধিপত্য থেকে মুক্ত একটি ব্যবস্থা । এই অঞ্চল ঘিরে আমাদের শান্তি ও সমৃদ্ধির একটি সমবায় অঞ্চল গড়ে তুলতে চায়।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে হোয়াইট হাউসে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়। মোদি বলেন, ভারতে বিদ্বেষের কোনো জায়গা নেই। গনতন্ত্র আমাদের ডিএনএ’তেই রয়েছে। জো বাইডেনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে মোদি বলেন, মানবিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার না থাকলে গণতন্ত্র থাকে না। সকলের সমর্থন, সকলের বিশ্বাস এবং সকলের প্রচেষ্টায় ভারত চলে।  সংখ্যালঘুদের নৈতিক অধিকারের প্রশ্নে মোদি বলেন, মানুষ যখন এই কথা বলে আমি সত্যিই অবাক হই। ভারত একটি প্রকৃত গণতন্ত্র। গণতন্ত্র আমাদের ডিএনএ’তে রয়েছে, আমাদের শিরায় রয়েছে।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news