ভারতে খাদ্য মূল্যবৃদ্ধি ৬ শতাংশ হতে পারে, উদ্বেগ বাড়ছে গ্রাম নিয়েও

এই অসমান বর্ষার জেরে এ বছর কৃষি উৎপাদনে ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল। গত দেড় মাস ধরে খাদ্যপণ্যের দামও উদ্বেগজনক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে বাজারে। মূলত আনাজপাতির মাথা তোলা দামের জেরে জুনে দেশের খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৪.৩১% থেকে বেড়ে ৪.৮১ শতাংশে পৌঁছেছে। জাপানের ব্রোকারেজ সংস্থা নমুরার রিপোর্টে আশঙ্কা, জুলাই-আগস্ট নাগাদ ওই হার ফের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সহনশীলতার মাত্রা (৬%) পার করতে পারে। একই দিনে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, কৃষি শ্রমিক এবং গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকদের ব্যবহার্য পণ্যগুলির খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হারও বেড়েছে গত মাসে।

কোথাও বন্যা, কোথাও বা বৃষ্টির ঘাটতি এই অসমান বর্ষার জেরে এ বছর কৃষি উৎপাদনে ক্ষতির আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল। গত দেড় মাস ধরে খাদ্যপণ্যের দামও উদ্বেগজনক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে বাজারে। বিশেষ করে টোম্যাটো, কাঁচালঙ্কা-সহ যে কোনও আনাজেই হাত ছোঁয়ানো দায়। থেমে নেই মাংস-ডিমের দর। বাড়তে শুরু করেছে চালের দামও। এই অবস্থায় জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধির যে আরও বাড়তে পারে, সে আশঙ্কা করছেন প্রায় সকলে। এ বার এক ধাপ এগিয়ে নমুরার রিপোর্টে জানানো হল, দু’এক মাসের মধ্যে ওই হার ৬ শতাংশ পার করতে পারে। ব্রোকারেজ সংস্থাটির রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বাজারে চালের সরবরাহ বাড়িয়ে দামকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এ সপ্তাহেই বাসমতি ছাড়া অন্যান্য সাদা চালের রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কেন্দ্র। অদূর ভবিষ্যতে ঠিক এই ভাবে আরও বেশ কিছু পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে হতে পারে । 

সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, গত বছর টানা ন’মাস দেশে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের উপরে ছিল। নিয়ম অনুযায়ী, কেন জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না, তা জানিয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে। সেই দামকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য গত বছরের মে মাস থেকে মোট ২.৫০ শতাংশ বিন্দু সুদ বাড়িয়েছিল তারা। অবশেষে এ বছরের গোড়ায় সেই সুদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় দাঁড়ি পড়ে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেছিলেন, কিছু দিন স্থির রাখার পরে অর্থনীতির চাকায় গতি বাড়তে সুদ ফের কমাতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতিতে সেই আশা কার্যত মুছতে বসেছে বলে মনে করছেন তারা।

আজ শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, গত মাসে কৃষি এবং গ্রামাঞ্চলের শ্রমিকদের ব্যবহার করা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৬.৩১% এবং ৬.১৬%। মে মাসে যা ৫.৯৯% এবং ৫.৮৪% ছিল। এখানেও সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খাদ্যপণ্যের মাথা তোলা দাম। পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, কৃষি শ্রমিকদের ব্যবহার্য খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.৩১% থেকে এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ৭.০৩ শতাংশে। গ্রামীণ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা ৬.০৭% থেকে হয়েছে ৬.৭%। চাল, ডাল, দুধ, মাছ-মাংস, গুড়, লঙ্কা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আনাজ এবং ফলের দাম বৃদ্ধিই এর প্রধান কারণ।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news