পুরাতাত্ত্বিক সমীক্ষায় ভেঙে পড়তে পারে জ্ঞানবাপী, আদালতে শঙ্কা মসজিদ কমিটির

 বেনারশের জ্ঞানবাপী মসজিদে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-কে সমীক্ষার কাজ চালাতে দিলে প্রাচীন ওই সৌধের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

বুধবার ‘অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’-র তরফে এলাহাবাদ হাই কোর্টে এই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। ওই আশঙ্কার প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট বলেছে, ‘আপনারা যদি এএসআই-এর বিশেষজ্ঞদের আশ্বাসেও আস্থা রাখতে না পারেন, তা হলে কিছুই বলার নেই।’

অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ বুধবার মসজিদ কমিটির স্পেশাল লিভ পিটিশনের নতুন শুনানিতে সম্মতি দিয়েছে। মসজিদ কমিটির আইনজীবী হাজেফা আহমদির আবেদন মেনে সোমবার (২৪ জুলাই) বেনারশের জেলা আদালদের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালতের এই বেঞ্চ। বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত জ্ঞানবাপী চত্বরে সমস্ত সমীক্ষা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে ওই সময়সীমার মধ্যে বেণারস জেলা আদালতের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এলাবাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে বলেছিল মসজিদ কমিটিকে।

শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ মেনেই মঙ্গলবার এএসআই-এর সমীক্ষা বন্ধের দাবিতে এলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল মসজিদ কমিটি। সেই আবেদনের শুনানিতে বুধবার মুসলিমপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘এএসআই সমীক্ষা হলে হাজার বছরের পুরনো ঐতিহাসিক স্থাপত্য ভেঙে পড়তে পারে।’’
 
প্রসঙ্গত, সোমবার শীর্ষ আদালতে এএসআই স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছিল, কোনও খনন না করে ‘গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার’-এর সাহায্যে তারা সমীক্ষা চালাতে সক্ষম। এর ফলে মসজিদের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। 

গত ২১ জুলাই বেনারশ জেলা আদালতের বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস জ্ঞানবাপী চত্বরে ‘বৈজ্ঞানীক সমীক্ষার’ নির্দেশ দিয়েছিলেন এএসআই-কে। তবে বিতর্কিত ওজুখানায় পাওয়া তথাকথিত ‘শিবলিঙ্গ’ এবং সন্নিহিত ‘সিল’ করা এলাকায় এখনই কোনও সমীক্ষা হবে না বলে বেনারশের জেলা আদাোলত জানায়।

জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটির তরফে পাঁচ হিন্দু মহিলার ২০২১ সালের পূজার্চনার আবেদন খারিজ করার জন্য বেনারশের জেলা আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। মসজিদ কমিটির আইনজীবী অভয় নাথ বেনারশের জেলা আদালতে জানিয়েছিলেন, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন এবং ১৯৯৫ সালের সেন্ট্রাল ওয়াকফ আইন অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না। অন্য দিকে, হিন্দু পক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু জৈন এবং হরিশঙ্কর জৈনের দাবি ছিল, ১৯৯১ সালের ওই আইন জ্ঞানবাপীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি জানান, ১৯৪৭ সালের পরেও শৃঙ্গার গৌরীস্থলে পূজার্চনার প্রমাণ রয়েছে। বেনারশের জেলা আদালত হিন্দু পক্ষের দাবি মেনে জ্ঞানবাপীর ‘সিল’ করা এলাকার বাইরে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল।সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি
 

news