ঈদ উত্সবের আমেজ থাকলেও কলকাতার নিউমার্কেট ও মারকুইস স্ট্রিট যেন একপ্রকার শূন্যতা আর হতাশায় ছেয়ে গেছে। বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে জমেনি এবারের ঈদবাজার, আর তার জন্য দায়ী করা হচ্ছে ভারতের ভিসানীতি এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে। ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, সীমান্ত বন্ধ থাকায় বাংলাদেশি ক্রেতারা আসতে পারছেন না, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে তাদের বিক্রিতে।
ব্যবসায় ধস, বন্ধ হচ্ছে দোকান

কলকাতার নিউমার্কেট, বড়বাজার ও মারকুইস স্ট্রিটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবারের বিক্রি কমেছে প্রায় ৩০-৬০ শতাংশ। মারকুইস স্ট্রিটের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়, যেখানে ব্যবসায় মন্দার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ৪০টির বেশি দোকান, হোটেল ও রেস্তোরাঁ।

এক ব্যবসায়ী বলেন, "গত বছর এই সময় দোকানে এত ভিড় ছিল যে নিঃশ্বাস ফেলার সময় পেতাম না। এবার সারাদিন বসে থেকেও বিক্রি নেই। বাংলাদেশি ক্রেতারা না থাকায় আমাদের বাজার পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।"
ভিসানীতির কারণে ক্ষতির মুখে কলকাতার অর্থনীতি

ব্যবসায়ীদের মতে, ভারতের ভিসানীতিতে জটিলতা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে আসা ক্রেতাদের সংখ্যা শূন্যের কোটায় নেমে গেছে। নিউমার্কেটের এক থ্রিপিস বিক্রেতা জানান, "বাংলাদেশিরা আমাদের প্রধান ক্রেতা, তারা না থাকলে আমরা টিকে থাকতে পারব না। আমরা চাই ভারত সরকার দ্রুত ভিসা সহজ করে দিক, নাহলে আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।"

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই পরিস্থিতির প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক অর্থনীতিতে। বড়বাজারে বেচাকেনা ৩০% কমেছে, নিউমার্কেটে ৬০% বিক্রি কমে গেছে—যা রাজ্যের রাজস্ব আয়ে বড় ধাক্কা দেবে।
রাজনৈতিক জটিলতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা

অনেক ব্যবসায়ী মনে করছেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে। "বাংলার অর্থনীতি দুর্বল হলে রাজনৈতিক লাভ হতে পারে কিছু দলের, কিন্তু আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি," বলেন এক গুজরাটি ব্যবসায়ী।

সীমান্ত খুলে বাংলাদেশি ক্রেতাদের কলকাতার বাজারে ফিরিয়ে আনা ছাড়া ব্যবসার এই দুর্দশা কাটানোর কোনো উপায় দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। এখন দেখার বিষয়, ভারত সরকার কবে নাগাদ এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়।

 

news