ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলেকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই নেতার এই আলোচিত সাক্ষাৎ এমন এক সময়ে হলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসন আবারও বিতর্কিত অভিবাসন নীতিকে সামনে নিয়ে এসেছে—এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদেরও বিদেশি জেলখানায় পাঠানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে!

সাংবাদিকদের সামনে ওভাল অফিসে বসেই ট্রাম্প বলেন, “আমি খারাপ লোকদের দেশছাড়া করতে আগ্রহী, তারা মার্কিন নাগরিক হলেও। আমরা সবাই জানি, আমাদের মধ্যেও খারাপ লোক আছে।”

এই মন্তব্য দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় তোলে। ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন এল সালভাদরের কুখ্যাত সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত কারাগারে অপরাধীদের পাঠানোর বিষয়টি “গভীরভাবে বিবেচনা করছে”, আর এতে মার্কিন নাগরিকদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “আপনারা ভাবছেন তারা (খারাপ মার্কিন নাগরিকরা) বিশেষ কেউ? না, তারা অন্য যে কাউকে মতোই খারাপ। তাদেরও পাঠানো উচিত।”

এই সাহসী এবং বিতর্কিত বক্তব্যের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় উপেক্ষা করে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ভুলবশত বহিষ্কৃত কিলমার আবরেগোকে ফেরত আনার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তার প্রত্যাবর্তনে সহায়তা করা সরকারের দায়িত্ব হলেও, ট্রাম্পের কর্মকর্তারা বলছেন, আবরেগো এখন একান্তভাবেই সালভাদরের অধীনে রয়েছেন।

এদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে কিছু প্রযুক্তি পণ্যের ওপর চীনের ওপর আরোপিত নতুন শুল্কের ছাড় ঘোষণা করার পর বিশ্ব শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। তবে ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, “কোনো দেশই ছাড় পাবে না।” খবর আলজাজিরার

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই অবস্থানকে “ভুল চর্চা” বলে অভিহিত করেছেন এবং পুরোপুরি শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।

ট্রাম্প একইসঙ্গে বলেন, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি সন্দেহ করছেন যে, ইরান হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে “ঠকাচ্ছে” এবং এ নিয়ে সামরিক পদক্ষেপের হুমকিও আবার উচ্চারণ করেছেন। এছাড়া তিনি জানান, ওষুধ শিল্পেও শীঘ্রই শুল্ক আসতে পারে।

রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলায় সুমি অঞ্চলে ৩৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ট্রাম্প দায় চাপিয়েছেন বাইডেন এবং জেলেনস্কির ওপর, বলেই দাবি করেছেন তাদের নেতৃত্বে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকানো যায়নি।

সব মিলিয়ে বুকেলের সফরকে কেন্দ্র করে হোয়াইট হাউজে এই ঘটনাপ্রবাহ যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন দেখার বিষয়, এই বিতর্কিত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের পথে ট্রাম্প কতদূর এগোতে পারেন, আর আইনি চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে মোকাবিলা করেন।

#ট্রাম্পনীতি #এলসালভাদর #অভিবাসনবিতর্ক #মার্কিনরাজনীতি #আন্তর্জাতিকসংবাদ

news