ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবারের দুপুরটা ছিল কূটনৈতিক উত্তাপ আর রাজনৈতিক সৌজন্যে মোড়া। মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির মধ্যে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে আলোচনা ছিল অনেক বিষয় নিয়েই—বিশ্ব রাজনীতি, পশ্চিমা মূল্যবোধ, বাণিজ্য এবং অবশ্যই, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ট্রাম্পের চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক।
মেলোনি এসেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে একটা আলোচনার সেতুবন্ধন তৈরি করতে। তবে ট্রাম্প যথারীতি ছিলেন তার চিরচেনা ‘ডিলমোডে’। বললেন, “ডিল হবেই, একশো ভাগ নিশ্চিত।” কিন্তু তারপর আবার যোগ করলেন, “তবে আমি কোনো তাড়ায় নেই।” এই দ্বৈত বার্তাটা যেন খুব ট্রাম্পীয়—একদিকে আশ্বাস, আরেকদিকে চাপ।
দুই নেতার বৈঠকে বোঝা গেল—শুধু রাজনীতি নয়, তাদের মধ্যে আদর্শগত মিলও কম নয়। মেলোনি তো একেবারে ট্রাম্পের স্লোগান স্টাইলেই বলে ফেললেন, “আমার লক্ষ্য পশ্চিমকে আবার মহান করা”—একটা স্পষ্ট বার্তা যে তিনি শুধু ইতালির নেতা নন, নিজেকে একজন পশ্চিমা আদর্শের ধারক বলেই ভাবছেন।
তবে এই ব্যক্তিগত সম্পর্কের রসায়ন ইউরোপীয় ইউনিয়নে একটু টকভাবও এনেছে। ফ্রান্সসহ অনেক দেশ ভাবছে, মেলোনির এমন একক পদক্ষেপ হয়তো পুরো ইইউ-র ঐক্যেই ফাটল ধরাতে পারে। যদিও ইউরোপীয় কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তার এই উদ্যোগ ‘সমন্বিত’ এবং স্বাগতযোগ্য।
এই বৈঠকের পেছনে বাণিজ্যের বড় প্রশ্নটা ছিল—ট্রাম্প আবার যদি ইইউ-র ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক চেপে দেন, তাহলে ইতালি যা বছরে প্রায় ১০ শতাংশ রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে, সেটার ওপর বড় আঘাত আসবে। আর তাই মেলোনি সরাসরি ট্রাম্পের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে চাইলেন, যাতে দেশের অর্থনীতি অকারণে ধাক্কা না খায়।
মেলোনি ফিরে যাবেন রোমে, কিন্তু তার রেখে যাওয়া বার্তাটা পরিষ্কার—এখন সময় কূটনৈতিক সাহসিকতার, এমনকি সেটি যদি পুরো ইউরোপীয় কৌশলের বাইরে গিয়ে হলেও।
#বিশ্বরাজনীতি #ইইউশুল্ক #ট্রাম্পমেলোনি #ইউরোপআমেরিকা #বাণিজ্যআলোচনা


