ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কমান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল হোসেইন সালামি শুধু একজন সেনা কর্মকর্তাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন কুরআন ও নাহজুল বালাগার হাফেজ এবং তিনটি ভাষায় দক্ষ এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। ১৩ জুন ইসরায়েলি হামলায় তার শাহাদাত ইরানসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বকে স্তম্ভিত করেছে।
জন্ম ও শিক্ষা:
১৯৬৮ সালে ইসফাহানের গোলপায়েগানে জন্মগ্রহণকারী সালামি তেহরান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান্ত্রিক প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ইসলামি বিপ্লবের সময় তিনি ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং পরবর্তীতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
সামরিক ক্যারিয়ার:
১৯৮০ সালে আইআরজিসিতে যোগদান করে ইরান-ইরাক যুদ্ধে বীরত্ব প্রদর্শন করেন সালামি। পরবর্তীতে তিনি ২৫তম কারবালা ডিভিশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তিনি আইআরজিসির সর্বোচ্চ কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ পান।
বিশেষ দক্ষতা:
আরবি, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় দক্ষ এই জেনারেল কুরআন ও নাহজুল বালাগা হিফজ করেছিলেন। তিনি ইরানের উচ্চতর জাতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন।
রাজনৈতিক অবস্থান:
সালামি ইসরাইলি শাসনব্যবস্থাকে অবৈধ মনে করতেন এবং হিজবুল্লাহ ও হামাসসহ প্রতিরোধ অক্ষকে সমর্থন দিতেন। তার নেতৃত্বে ইরান সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের বিরুদ্ধে সাফল্য অর্জন করে।
নিষেধাজ্ঞা:
২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাকে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করলে তিনি বলেছিলেন, "শত্রুরা তাদের কর্মকাণ্ডের পরিণতি বুঝতে পারবে।"
শাহাদাত:
১৩ জুন তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তার মরদেহ ২৭ জুন দাফন করা হবে। তার শাহাদাত ইরানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


