যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে “No Kings” নামে বিশাল বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে লাখো মানুষ। শনিবার দেশটির ৫০টি রাজ্যে একই সঙ্গে ২,৭০০টিরও বেশি স্থানে এই বিক্ষোভ হয়। আয়োজকদের হিসাবে, প্রায় ৭০ লাখ মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন — যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশ।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রায় সব বিক্ষোভই শান্তিপূর্ণ ছিল। বড় শহরগুলিতে কোনো সংঘর্ষ বা গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেনি।

কেন এই বিক্ষোভ?

বিক্ষোভকারীদের মূল অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি দেশকে “গণতন্ত্রবিরোধী পথে” নিয়ে যাচ্ছে।
তাদের রাগের কেন্দ্রে ছিল কয়েকটি বিষয় —

প্রশাসনের  অভিযান ও অভিবাসন দমননীতি,

মার্কিন শহরগুলোতে সেনা মোতায়েন,

স্বাস্থ্যসেবায় কাটছাঁট,

এবং ফেডারেল সরকারের শাটডাউন।

রিপাবলিকান কংগ্রেস ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে তহবিল বিল নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় সরকারের অচলাবস্থা বা শাটডাউন আরও উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

 আন্দোলনের ঢেউ

জুনের প্রথম দফার পর এটি ছিল দ্বিতীয় বৃহৎ বিক্ষোভ। এবার অংশগ্রহণ বেড়েছে প্রায় দুই লাখ। আয়োজকরা বলেন, “আমরা রাজা চাই না, গণতন্ত্র চাই।”

দেশজুড়ে বিক্ষোভের রূপ

শিকাগো:
অভিবাসন নীতির বিরোধিতা করতে হাজার হাজার মানুষ “Hands Off Chicago” লেখা পোস্টার হাতে রাস্তায় নেমে আসে। আমেরিকান পতাকার পাশাপাশি উড়েছে মেক্সিকান ও প্রাইড পতাকা।

🇺🇸 লস অ্যাঞ্জেলেস:
সৃজনশীল প্রতিবাদে মেতে ওঠে মানুষ। কেউ কেউ হ্যালোইনের পোশাকে বিক্ষোভ করে। একজন অংশগ্রহণকারী বলেন, “এটা যুদ্ধ নয়, এটা মানুষের প্রতিবাদের উৎসব।”

🇺🇸 ওয়াশিংটন ডিসি:
সরকারি শাটডাউনের ১৮তম দিনে ফেডারেল কর্মচারীরা পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউয়ে মিছিল করেন। অনেকে বলেন, “চাকরি হারানোর ভয় আর বিল পরিশোধের চিন্তায় ঘুমাতে পারছি না।”

🇺🇸 নিউ ইয়র্ক সিটি:
টাইমস স্কোয়ার থেকে লোয়ার ম্যানহাটন পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ঢল নামে। ১৯৬০-এর দশক থেকে আন্দোলনে থাকা এক প্রবীণ বলেন, “আমরা আমেরিকাকে ভালোবাসি, তাই এর ভবিষ্যতের জন্য লড়ছি।”

🇺🇸 আটলান্টা:
জর্জিয়ার রাজধানীতে মানুষ নাগরিক অধিকারের ঐতিহ্যকে স্মরণ করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেন। “গণতন্ত্র রক্ষা, ঘৃণা প্রত্যাখ্যান” — ছিল তাদের প্রধান স্লোগান।

প্রতিবাদের বার্তা স্পষ্ট

“আমরা রাজা মানি না, আমরা জনগণ,”—এই স্লোগানে মুখর ছিল মার্কিন রাস্তাগুলো। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আন্দোলন শুধু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নয়, বরং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে এক গভীর উদ্বেগের প্রকাশ।

 

news