ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ করে বলেছেন, তারা গর্ব করে বলছেন ইরানের পরমাণু শিল্পে হামলা চালিয়ে তা ধ্বংস করেছেন। তিনি বলেন, “ভালো, এই ভ্রান্ত ধারণা নিয়েই থাকো!”
সোমবার (২১ অক্টোবর) ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে পদকজয়ী ইরানি তরুণদের সঙ্গে দেখা করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
খামেনেয়ী বলেন, ক্রীড়া ও বিজ্ঞানে পদকজয়ীরা ইরানের জনগণকে আনন্দে ভাসিয়েছেন। এটি অত্যন্ত মূল্যবান।
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন একটি নরম যুদ্ধের মধ্যে আছি। এই যুদ্ধে শত্রুর লক্ষ্য জাতিকে হতাশ করা, তাদের নিজেদের সক্ষমতার প্রতি নিরাশ করা। কিন্তু তোমরা, ক্রীড়া ও বিজ্ঞানে পদকজয়ীরা, শত্রুর বিপরীতে এগিয়ে গেছ।”
তিনি বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলে গিয়ে হাস্যকর আচরণ ও ফাঁকা কথা দিয়ে হতাশ জায়নিস্টদের মনোবল ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। “আমার বিশ্লেষণ, এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল তাদের হতাশা কাটানো।”
খামেনেয়ী বলেন, ১২ দিনের যুদ্ধে জায়নিস্টরা এমন আঘাত পেয়েছে, যা তারা কল্পনাও করেনি। তাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তাদের হতাশা থেকে টেনে বের করতে চেয়েছেন।
ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, জায়নিস্টরা কখনো ভাবেনি ইরানি তরুণদের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের গবেষণা কেন্দ্রের গভীরে পৌঁছে সেগুলো ধ্বংস করবে। কিন্তু তা ঘটেছে।
গাজা যুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গাজার যুদ্ধে অপরাধের প্রধান অংশীদার আমেরিকা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারা ইসরায়েলকে বিপুল অস্ত্র দিয়েছে, যা গাজার নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। আমেরিকা এই অপরাধের অংশীদার।”
তিনি বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট দাবি করছেন, তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছেন। “গাজায় ২০ হাজারের বেশি শিশু ও নবজাতক শহীদ হয়েছে। এরা কি সন্ত্রাসী ছিল? ৪-৫ বছরের শিশু, নবজাতক—এদের হত্যা করেছ! আপনারাই সন্ত্রাসী!”
খামেনেয়ী বলেন, “আমেরিকাই প্রকৃত সন্ত্রাসী। তারা আইএস (দায়েশ) তৈরি করেছে এবং পশ্চিম এশিয়ায় চাপিয়ে দিয়েছে। এখনো তারা আইএস’র কিছু সদস্যকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে।”
তিনি বলেন, “অন্য দেশের পরমাণু শিল্পে হস্তক্ষেপ করার অধিকার আপনাদের কোথায়? কোন দেশ কী করবে, তা বলার আপনারা কে? ইরানের পরমাণু সক্ষমতার সঙ্গে আপনাদের কী সম্পর্ক?”
তিনি বলেন, “আমেরিকা বলে, তারা ইরানের বন্ধু। মিথ্যা! তাদের নিষেধাজ্ঞা ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে। তারা ইরানের শত্রু, বন্ধু নয়।”
খামেনেয়ী বলেন, “আমেরিকা পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ বাঁধায়, হত্যাকাণ্ড ঘটায়। এত সামরিক ঘাঁটি কেন? এই অঞ্চলের সঙ্গে আপনাদের কী সম্পর্ক? এটা কিছু দেশে প্রভাব ফেলতে পারে, কিন্তু ইরানি জাতির ওপর কখনোই নয়।
”
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ৭০ লাখ মানুষের বিক্ষোভের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “যদি সত্যিই ক্ষমতা থাকে, তাহলে অপপ্রচার, হস্তক্ষেপ আর সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করুন। লাখো মানুষকে শান্ত করে তাদের বাড়িতে ফেরান।”খামেনেয়ীর ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি
