ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজাবাসীর জীবনে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ইসরাইল বাহিনী আগের মতোই দমন-নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বিক্ষিপ্তভাবে হামলা চলছে। গাজার ‘লাইফলাইন’ হিসেবে পরিচিত রাফাহ ক্রসিংও খুলছে না ইসরাইল। ত্রাণ সহায়তাও আটকে রাখা হচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা নিজেরাই তাদের এই দুঃখ-কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন। বুধবার আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরাইলি বাহিনীর হাতে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। বুধবার তুফাহ এলাকায় একজন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এছাড়া, যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজায় ত্রাণ প্রবেশের কথা থাকলেও ইসরাইল তা বন্ধ রেখেছে। উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ সীমান্ত বন্ধ, মাত্র দুটি সীমান্ত দিয়ে সীমিত ত্রাণ প্রবেশ করছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ৬,৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের কথা ছিল, কিন্তু সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ৯৮৬ ট্রাক ঢুকেছে। জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এক্স-এ পোস্ট করে বলেছে, ‘সব ক্রসিং খুলতে হবে। ত্রাণ অবাধে প্রবেশ করতে হবে।’

ইসরাইলের হামলা ও যুদ্ধবিরতির চ্যালেঞ্জ

ইসরাইলের চলমান সহিংসতার মধ্যে যুদ্ধবিরতি টিকিয়ে রাখতে মঙ্গলবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইসরাইলে সফর করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ট্রাম্পের দুই দূত স্টিফ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার। সফরকালে ভ্যান্স বলেন, যুদ্ধবিরতি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো চলছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস সহযোগিতা না করলে ‘তাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে’। তিনি হামাসের নিরস্ত্র হওয়ার জন্য কোনো সময়সীমা দেননি। 

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল চুক্তির মূল লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের সহযোগিতা করছে, তবে এখনো অনেক কাজ বাকি।’
বুধবার পশ্চিম জেরুজালেমে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ভ্যান্স। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ক্লায়েন্ট রাষ্ট্র চাই না, ইসরাইল তা নয়। আমরা একটি অংশীদারিত্ব চাই, একজন মিত্র চাই।’

ইসরাইলের পরিকল্পনা ও শান্তির সম্ভাবনা

ভ্যান্স আরও বলেন, ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এই অঞ্চলে ইসরাইল শক্তিশালী নেতৃত্ব দিতে পারে। নেতানিয়াহু জানান, তিনি ভ্যান্সের সঙ্গে যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অবিশ্বাস্য যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা তৈরি করছি। বেসামরিক সরকার, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কে নিরাপত্তা দেবে তা নিয়ে কথা হয়েছে।’

নেতানিয়াহু আরও বলেন, এটা সহজ হবে না, তবে ‘সব সম্ভব। আমরা সত্যিই এমন একটি শান্তি পরিকল্পনা তৈরি করছি, যা এক সপ্তাহ আগেও আলোচনায় ছিল না।’

 

news