বর্তমান বিশ্বে যেখানে বেশিরভাগ মানুষ একটি বা দুটি ক্রেডিট কার্ড পরিচালনা করতে গিয়ে গলদঘর্ম হন, সেখানে হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা মনিশ ধামেজা আশ্চর্যজনকভাবে ১ হাজার ৬৩৮টি বৈধ ক্রেডিট কার্ডের মালিক! এই হাজার হাজার ক্রেডিট কার্ডই মনিশকে এনে দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের খেতাব। তবে শুধু ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহের জন্যই নয়, বরং বুদ্ধিমানের সঙ্গে তা ব্যবহারের দক্ষতা অর্জন করার জন্যও তিনি এই রেকর্ড গড়েছেন।
২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল তিনি এই বিরল খেতাব লাভ করেন। তার এই কীর্তি প্রমাণ করে যে, আর্থিক সরঞ্জামগুলো যখন বুদ্ধিমানের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, তখন ঋণের পরিবর্তে তা এক প্রকার 'সুপারপাওয়ারে' পরিণত হয়। বেশিরভাগ মানুষ ক্রেডিট কার্ডকে সুদ এবং অতিরিক্ত খরচের সঙ্গে যুক্ত করলেও, মনিশ সেই ধারণা উল্টে দিয়েছেন। তিনি শূন্য বকেয়া ব্যালেন্স বজায় রেখে ক্যাশব্যাক, রিওয়ার্ড পয়েন্ট, বিমান ভ্রমণ, হোটেলে থাকা এবং এমনকি বিনামূল্যে সিনেমার টিকিটও জিতেছেন।
ক্রেডিট কার্ড ছাড়া আমার জীবন অসম্পূর্ণ
তিনি বলেন, "আমি মনে করি ক্রেডিট কার্ড ছাড়া আমার জীবন অসম্পূর্ণ ছিল। আমি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, এয়ারমাইল এবং ক্যাশব্যাক কাজে লাগিয়ে ভ্রমণ, রেল লাউঞ্জ, বিমানবন্দর লাউঞ্জ, খাবার, স্পা, হোটেল ভাউচার, ফ্লাইট টিকিট, শপিং ভাউচার, সিনেমা, কমপ্লিমেন্টারি টিকিট ইত্যাদি উপভোগ করি।"
                                                                           
                                                                    
                                    
মনিশের গোপন রহস্যটি খুবই সহজ কিন্তু সুশৃঙ্খল। তিনি প্রতিটি ঋণ সময়মতো পরিশোধ করেন। সুদ ছাড়াই শত শত কার্ডে পুরষ্কার এবং সুবিধাগুলো ব্যবহার করে মনিশ দেখিয়েছেন, কীভাবে দায়িত্বশীল ঋণ ব্যবহার করে একটি ব্যয়ের উপকরণকে সঞ্চয়ের 'ইঞ্জিনে' পরিণত করা যায়।
নোটবন্দির সময়ও তার জীবন স্বাভাবিক
মজার ব্যাপার হলো, ২০১৬ সালের ভারতের সবচেয়ে বড় আর্থিক বিপর্যয় নোটবন্দির (Demonetization) সময় এই ক্রেডিট কার্ডগুলোই তার চলার পথ সহজ করে দিয়েছিল। যখন ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট হঠাৎ বাতিল করা হয়, তখন সারা দেশের মানুষ নগদ টাকা তোলার জন্য ব্যাংক এবং এটিএমের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু মনিশের জন্য, নগদহীন জগত স্বাভাবিকভাবেই চলছিল।
                                                                           
                                                                           
                                                                    
                                    
মনিশের শিক্ষাগত পটভূমিও চমকপ্রদ, যা তার বিশ্লেষণাত্মক মানসিকতার প্রতিফলন ঘটায়। তিনি কানপুরের সিএসজেএম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং গণিতে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর লখনউয়ের ইন্টিগ্রাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর এবং ইগনু থেকে সমাজকর্মে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এই যুগে যখন ডিজিটাল পেমেন্ট আধিপত্য বিস্তার করে, মনিশ ধামেজার গল্প প্রমাণ করে যে আর্থিক সাক্ষরতা এমনকি একটি সাধারণ মানিব্যাগকেও সুযোগের 'পাওয়ার হাউসে' রূপান্তরিত করতে পারে।
 
                                
                                 
	 
                                 
                     
 
 
 
                                                                                    
 
                                                                                                                          
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                             
                                                                                                                            