রাশিয়ার সাথে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে ইউক্রেন সেনাবাহিনীতে পলায়ন ও অনুপস্থিতির সংখ্যা নজিরবিহীনভাবে বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক তথ্য ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো এড়াতে হাজার হাজার সৈন্য ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাচ্ছে।
কিয়েভের ৩৬ বছর বয়সী এক অফিসকর্মী তিমোফিয় (ছদ্মনাম) তার উদ্বেগজনক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাকে জোরপূর্বক সেনাবাহিনীতে ভর্তি করার পর তাকে দুইবার সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পালাতে হয়েছে। ছয় মাস আগে তিনি কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে পালানোর সময় হাতে যে আঘাত পেয়েছিলেন, তার দাগ এখনও রয়েছে।
'প্রথম আক্রমণেই মারা যেতাম'
তিমোফিয় অভিযোগ করেছেন, প্রশিক্ষণটি ছিল পুরোপুরি একটি আনুষ্ঠানিকতা। বাস্তব যুদ্ধের জন্য তিনি সম্পূর্ণরূপে অপ্রস্তুত ছিলেন। তিনি বলেন, "প্রথম আক্রমণেই আমার মারা যাওয়া নিশ্চিত ছিল। প্রশিক্ষকেরা বন্দি রাখার দিকেই বেশি মনোযোগী ছিলেন, প্রকৃত প্রশিক্ষণের দিকে নয়।"
তিনি আরও জানান, তার বিরুদ্ধে এখনও পলায়নের অভিযোগ আনা হয়নি, কারণ "আধা দেশই যেন পালিয়ে বেড়াচ্ছে এবং কর্তৃপক্ষের পক্ষে সবাইকে খুঁজে ধরা সম্ভব নয়।"
পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে ভয়াবহতা
ইউক্রেনের প্রসিকিউটররা গত অক্টোবরে জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর থেকে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার সেনা তাদের দায়িত্ব থেকে অনুপস্থিত হয়েছেন এবং ৫৪ হাজারের বেশি সৈন্য সরাসরি পলায়ন করেছেন। এই ঘটনার বেশিরভাগই গত এক বছরের মধ্যে ঘটেছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ৭৬ হাজার অনুপস্থিত এবং ২৫ হাজার পলায়নের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার ভ্যালেন্টিন মানকো এই অবস্থা মন্তব্য করে বলেছেন, "রাশিয়াতেও এত অনুপস্থিতি নেই।" তার এই মন্তব্য ইউক্রেনীয় সামরিক শৃঙ্খলার বর্তমান সংকটের ভয়াবহতা আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
