হিজাব নয়, হেয়ারব্যান্ড পরায় ইরানের মহিলা পর্বতারোহীর বাড়ি ভাঙচুর হিজাবপন্থীদের
হিজাব বিদ্রোহের (Anti Hijab Protest) উত্তাপ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। পালটা কট্টরপন্থী সরকারেরও দমনপীড়নের তীব্রতা বাড়ছে। পুরনো ঘটনার জের টেনে ‘শাস্তি’ অব্যাহত। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইরানের (Iran) মহিলা পর্বতারোহীর বাড়ি নির্বিচারে ভেঙে ফেলা হল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ভিডিও (Video Viral)। তাতে দেখা যাচ্ছে, বাড়িঘরের এই অবস্থা দেখে পর্বতারোহীর ভাই হাউহাউ করে কাঁদছেন। যদিও ইরানের একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ওই বাড়ি বেআইনিভাবে তৈরি হওয়ায় তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা একেবারেই হিজাবপন্থীদের মৌলবাদী কাজকর্মের বহিপ্রকাশ।
এলনাজ রেকাবি (Elnaz Rekabi)। ইরানের মহিলা পর্বতারোহী। একাধিক পর্বতশৃঙ্গ জয় করে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরে বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। গত অক্টোবর মাসে একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন এলনাজ। অভিযোগ, তিনি ঠিকমতো হিজাব না পরেই আন্তর্জাতিক মঞ্চে উপস্থিত হন। পরে দেশে ফিরতেই তেহরান বিমানবন্দরে তাঁকে কার্যত ‘হিরো’র সম্মান দিয়ে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন অনুরাগীরা। সেসময় দেখা গিয়েছিল, এলনাজের মাথায় স্রেফ হেয়ারব্যান্ড (Hairband)। হিজাব ছিল না। পরে তাঁকে অবশ্য ক্ষমা চাইতে হয়েছিল হিজাব না পরার জন্য।
দু মাস আগেকার সেই ঘটনার রেশ টেনে রবিবার তাঁর ইরানের বাড়ি ভেঙে ফেলা হল। এই মুহূর্তে বাড়িতে তিনি না থাকলেও ছিলেন ভাই দাভুদ। যিনি নিজেও দিদির মতো স্বনামধন্য অ্যাথলেট। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া একটি ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, এলনাজের সমস্ত মেডেল ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নষ্ট করা হয়েছে দাভুদের মেডেলগুলিও।
ভিডিও দেখে এক অনুরাগীর বক্তব্য, ”এমন দেশেই রেকাবি থাকেন। যাঁরা প্রচুর পরিশ্রম করে, অজস্র পদক এনে দেশকে গর্বিত করে তোলেন, এদেশে তাঁদেরই আর থাকার জায়গা হয় না। তাঁর এত বড় বাড়ি ভেঙে ফেলা হল! কী আর বলব?”
প্রসঙ্গত ইরানের হিজাব বিদ্রোহ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ঠিকমতো হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ পুলিশের অকথ্য অত্যাচারে মাসাহা আমিনি নামে ২২ বছরের এক তরুণী প্রাণের বিনিময়ে জন্ম হয়েছিল এই বিদ্রোহের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্রোহের অঙ্কুর ধীরে ধীরে বৃক্ষে পরিণত হচ্ছে। পালটা দমনপীড়নও বাড়ছে হিজাবপন্থীদের। তারই একটি নিদর্শন মহিলা পর্বতারোহী এলনাজের বাড়ি ভাঙচুর।
সংবাদ প্রতিদিন /এনবিএস/২০২২/একে


