৫০০-র বেশি মৃত্যুদণ্ড এক বছরে! মৌলবাদের দাপটে ক্ষতবিক্ষত ইরান


 নাজিম হিকমত লিখেছিলেন, ‘মানুষের মুন্ডুটা তো বোঁটার ফুল নয়, ইচ্ছে করলেই ছিঁড়ে নেবে!’ ইরান (Iran) যেন প্রতিদিন প্রমাণ করছে, মানুষের মুন্ডু এখন সে দেশে বোঁটার ফুলের মতোই। ইচ্ছে করলেই টুক করে ছিঁড়ে নেওয়া যায়।
পুলিশি নির্যাতনে মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই অগ্নিগর্ভ ইরান। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে পথে নেমেছিল শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। সেই আন্দোলন কঠোর হাতে দমানোর চেষ্টা করেছিল ইরান প্রশাসন। অনেককে জেলে ঢুকিয়ে, অনেককে মৃত্যুদণ্ড (capital punishment) দিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে চেয়েছিল সরকার। কিন্তু সম্প্রতি চাপে পড়ে হিজাব আইন সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান।
এরমধ্যেই প্রকাশ্যে এল একটি তথ্য। জানা গেছে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৫০০-এরও বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান, যা গত বছরের থেকেও অনেক বেশি। সোমবার, ৫ ডিসেম্বর এক প্রতিবেদনে নরওয়ের সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস এই তথ্য জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, এই বছর ইরানে অন্তত ৫০৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে মনে করা হচ্ছে। তারা এখনও বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন।
এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয় যে, ইরানে চলতি বছরে মৃত্যুদণ্ডের এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক। যা বুঝিয়ে দিচ্ছে আগামীদিনে এই বিশ্ব কোনদিকে এগোচ্ছে। উল্লেখ্য, ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার অভিযোগে রবিবারই চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সদ্য প্রকাশিত পরিসংখ্যানে রয়েছে তাঁদের নামও। এই মানবাধিকার সংগঠনটি জানিয়েছে, তেহরানের বাইরে কারাজ শহরের রাজাই শাহর কারাগারে ওই চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সাত মাস আগে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। 
ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মাহমুদ আমিরি মগাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বন্ধ দরজার আড়ালে এঁদের সবার বিচার করা হয়েছে। এখানে সুষ্ঠুভাবে বিচার হয়নি। তাঁদের এই সাজার মধ্যে আইনি বৈধতার যথেষ্ট অভাব ছিল। আসলে এভাবে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে সবার মনে ভীতির সঞ্চার করতে চাইছে ইরান সরকার।’
তথ্য অনুযায়ী, ইরানে গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবারই সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আইএইচআর। ২০২১ সালে ৩৩৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল সেদেশে। ২০২০ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ২৬৭ জন।

খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে
 

news