‘আমরা যেন খাঁচার পাখি!’ ক্ষোভে, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আফগান ছাত্রীরা, তালিবানি ফতোয়ায় বন্ধ লেখাপড়া

তাঁরা (Afghan Women) এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, পড়াশোনা (University Ban) বন্ধ হয়ে গেল তাঁদের। আর কখনও আসা হবে না প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে, কখনওই বসা হবে না ক্লাসরুমে, আড্ডা মারা হবে না একসঙ্গে। তাঁরা যেন এখন থেকে ‘খাঁচার পাখি’। তালিবানি (Taliban) ফতোয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার পরে নিজেদের এমনটাই ভাবছেন আফগান তরুণীরা।
সম্প্রতি মহিলাদের পার্ক এবং জিমে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান। তারপরেই ফতোয়া দেয়, আফগানিস্তানের প্রাইভেট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও যেতে পারবেন না মহিলারা। মিডল স্কুল এবং হাইস্কুলে তো মেয়েদের নিষিদ্ধ করা হয়েছিল আগেই। অনেকেই বলছেন, ক্ষমতা দখলের পরে প্রাথমিকভাবে তালিবান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মধ্যপন্থী শাসন, নারী এবং সংখ্যালঘু অধিকারের। কিন্তু বাস্তবে তার কোনওটাই ঘটছে না। কঠোর ইসলামি আইনই অস্ত্র করছে তারা।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা মেয়েদের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘনিয়েছে প্রতিবাদ। প্রসঙ্গত, কাবুলে আফগানিস্তানের বৃহত্তম একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। গত বছর অগস্ট মাসে তালিবান ক্ষমতায় আসার পরে দেখা গেছিল, সেখানকার ক্যাম্পাসে কালো পোশাক পরে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন ছাত্রীরা। সম্ভবত সেই থেকেই মহিলা পড়ুয়াদের টার্গেট করে রেখেছিল তালিবান!

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাবুলের এক ছাত্র আবার বলছেন, ‘আমার বোন কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ছিল। ও কয়েকদিন আসেনি কলেজে, এখনও জানে না এই নিষেধাজ্ঞার কথা। জানতে পারলেই ভেঙে পড়বে। এটা তালিবানের অশিক্ষা এবং অজ্ঞানতা ছাড়া কিছুই নয়। তারা মানবাধিকার নিয়ে কিছু জানে না, ইসলাম নিয়েও কিছু জানে না। আগামীতে আরও খারাপ সময় আসছে। সবাই খুব ভয় পেয়ে আছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরে ভেঙে পড়েছেন ছাত্রীরা। তাঁদের কান্নাকাটির ভিডিও-ও সামনে এসেছে এর মধ্যেই। কুন্দুজের এক নার্সিং ছাত্রী, ২৩ বছরের আমিনি বলছেন, ‘আমরা যেন খাঁচায় বন্দি পাখি! সবাইকে জড়িয়ে ধরে খুব কেঁদেছি আমরা, চিৎকার করেছি! আমাদের সঙ্গেই কেন এমন হল?’ আমিনির আরও দুই বোন রয়েছে, স্কুলে এবং কলেজে পড়ত তারা। তাদের শিক্ষার দরজাও বন্ধ হয়েছে।

কাবুলে পশতু সাহিত্যের ছাত্রী বলছেন, ‘আমাদের কোনও ক্ষমতাই নেই কিছু করার। কেউ আমাদের কথা শোনার নেই। আমাদের প্রতিবাদ করারও অধিকার নেই, সব আশা হারিয়ে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি আমরা। আমাদের চাকরি নেই, কোথাও যাওয়ার অনুমতি নেই, দেশ ছাড়ারও উপায় নেই। আমাদের সব শেষ।’

খবর দ্য ওয়ালের /এনবিএস/২০২২/একে
 

news