লিভার আমাদের দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের ৫০০টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, যার মধ্যে রক্ত পরিশোধন, পিত্ত উৎপাদন এবং পুষ্টি প্রক্রিয়াজাত করার মতো কাজগুলো অন্তর্ভুক্ত। তবে, কিছু দৈনন্দিন অভ্যাস লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

আমরা প্রতিদিন এমন কিছু কাজ করি যা অজান্তেই লিভারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদে তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আসুন জেনে নিই এমন ছয়টি অভ্যাস, যা থেকে আমাদের সাবধান থাকা উচিত।  

ডিহাইড্রেশন
লিভারের কাজ ঠিকভাবে সম্পন্ন করতে শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকা প্রয়োজন। পানি না পেলে লিভারের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। সকালে পর্যাপ্ত পানি পান করলে পিত্তসহ গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক তরল তৈরি হয়। তবে, অতিরিক্ত এনার্জি ড্রিংক, ভেষজ বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ লিভারের ওপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়।  

অ্যালকোহল পান
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন লিভারের বিষাক্ত পদার্থ অপসারণের ক্ষমতাকে ব্যাহত করে। এটি প্রদাহ, ফ্যাটি লিভার এবং লিভারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হতে পারে।  

বিশেষজ্ঞের মন্তব্য: "অ্যালকোহল সরাসরি লিভারের কোষ ধ্বংস করে এবং দীর্ঘমেয়াদে তা লিভার সিরোসিসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

ঘুমের অভাব
রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে লিভারের ওপর অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি হয়। এটি লিভারের কার্যক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে। ফোনে স্ক্রোল করা বা সারা রাত অনুষ্ঠান দেখার অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত।  

চিনি খাওয়া
চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয়তে থাকা অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজ লিভারের শত্রু। এটি ফ্যাটি লিভারের কারণ হতে পারে, যা ভবিষ্যতে বড় সমস্যার দিকে ঠেলে দেয়।  

ডায়েটিশিয়ানের মন্তব্য: "অতিরিক্ত চিনি খাওয়া শুধু লিভার নয়, সারা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

ব্যায়াম না করা
ব্যায়ামের অভাব শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। এতে লিভারের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে।  

ব্যায়াম না করলে লিভার এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ে।  

অনিরাপদ যৌনতা
অনিরাপদ যৌনতা থেকে হেপাটাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে, যা লিভারের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। সুরক্ষিত সহবাস এই ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।  

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: "সবসময় সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। হেপাটাইটিসের ঝুঁকি থেকে বাঁচার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রয়োজন।

দৈনন্দিন জীবনের এই সাধারণ অভ্যাসগুলো নিয়ন্ত্রণ করলে আমরা লিভারকে সুস্থ রাখতে পারি। নিজের শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন সচেতনতা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অভ্যাস।  

আপনার লিভার সুস্থ রাখতে এসব অভ্যাস থেকে দূরে থাকুন। নিয়মিত পানির গ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা নিশ্চিত করুন।  

news