ঢাকা, সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১
Logo
logo

ভর্তি ফরম বিক্রিতে ঢাবির আয় প্রায় ৩০ কোটি


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২২ মার্চ, ২০২৩, ০২:০৩ পিএম

ভর্তি ফরম বিক্রিতে ঢাবির আয় প্রায় ৩০ কোটি

 ভর্তি ফরম বিক্রিতে ঢাবির আয় প্রায় ৩০ কোটি

শেষ হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আন্ডারগ্রাজুয়েট ভর্তি পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া। পূর্ব ঘোষিত সময়ে গত সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে এ আবেদন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এতে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করেছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৪৩০ শিক্ষার্থী। জনপ্রতি শিক্ষার্থীর আবেদন ফি ছিল ১ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ফি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেছে।

তবে প্রতি আবেদনে অনলাইন সার্ভিস চার্জ ও ব্যাংক পেমেন্ট সার্ভিস চার্জ বাবদ ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা খরচ বাদ দিলে ফি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রকৃত সংগ্রহ ২৮ কোটি ৫৪ লাখ ৪৮ হাজার ২৯৫ টাকা। গত বছর এ আয় ছিল ২৭ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার ৮৬২ টাকা। অর্থাৎ গতবছরের থেকে বেড়েছে আয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, চার ইউনিট মিলে দুই লাখ ৯৮ হাজার ৪৩০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। এবার ভর্তি পরীক্ষার মোট আসন ৫ হাজার ৯৬৫টি। সে হিসেবে আসন প্রতি লড়বেন প্রায় ৫০ জন।

অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে আবেদন পড়েছে ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৬টি। এ ইউনিটে মোট আসন দুই হাজার ৯৩৪টি। সে হিসেবে আসন প্রতি লড়বেন প্রায় ৪২ জন শিক্ষার্থী।

বিজ্ঞান ইউনিটে এক হাজার ৮৫১টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৯টি। আসন প্রতি লড়াই হবে প্রায় ৬৯ জনের। বিজনেস স্টাডিজে এক হাজার ৫০টি আসনের জন্য আবেদন করেছেন ৪১ হাজার ৩৬৮জন। আসন প্রতি প্রার্থী প্রায় ৪০ জন।

এ ছাড়াও, চারুকলা ইউনিটে ১৩০টি আসন বিপরীতে ৭ হাজার ৯৭টি আবেদন পড়েছে। আসন প্রতি লড়াই হবে প্রায় ৫৫ জনের।

গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন ফি বৃদ্ধি করে ১ হাজার টাকা করলে এ নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা- সমালোচনা। তবে এবার ১ হাজার টাকা ফি নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করতে পারবে কি না তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।

এ নিয়ে বিস্তারিত কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে। তিনি এই ফি’র টাকা বিভিন্ন খাতে ব্যবহার এবং বৃদ্ধির কারণ উল্লেখ করে জানান, ২০১৯ সালে লিখিত আকারে পরীক্ষা নেওয়ার কারনে খাতা মূল্যায়ন বাবদ ১০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়। ফলে আবেদন ফি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা করা হয়। এর পরের বছর প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা শহরের বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতে পরীক্ষার আয়োজন করে। যে কারণে বিভিন্ন ধরনের ব্যয় বেড়ে যায়। যেমন, যাওয়া-আসা, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন, ডিভাইস ক্রয়, মনিটরিং ইত্যাদি। ফলে ওই বছর আরও ২০০ টাকা বাড়ানো হয়।

তিনি আরও জানান, ২০১৮ সালের পর থেকে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে আয় দেখানোর নির্দেশ দেয় ইউজিসি ( বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) এবং ওই আয় থেকে বিশ্বিবদ্যালয়ের মোট বাজেটের শতকরা ৪০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া হয়। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়কে আবেদন ফির টাকা দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম চালানোর ক্ষেত্রে হিমশিমের মুখে পড়তে হয়। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য গবছর ৩৫০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে । ৩৫০ টকা বৃদ্ধির ফলে মোট ফি হয় ১ হাজার টাকা। যার ৪০ শতাংশ পাবে ইউজিসি এবং অনলাইন সার্ভিস ও ব্যাংক পেমেন্ট সার্ভিস চার্জ বাবদ ব্যয় হবে ৪৩ টাকা ৫০ পয়সা করে । বাকি টাকা ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্নর কাজে ব্যবহৃত হবে বলে তিনি জানান।

ওই শিক্ষক বলেন, এবার পেপারের দাম অনেক বেড়ে গেছে। প্রশ্ন এবং খাতা সরবরাহের ব্যয় নিশ্চয়ই গতবারের থেকে বাড়বে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কেমনে পরীক্ষা পরিচালনা করবে তা আমি জানি না।

তবে এই ফি নিয়ে সমাজের নিম্নমানের পরিবারের একজন স্টুডেন্টের সমস্যা হয়েছে জানিয়ে তিনি আবেদন ফি কমানোর জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। ওই শিক্ষক বলেন, প্রথমত, ইউজিসি আয় দেখানোর নামে যে ফি টা নিয়ে নেয়; এটা না করলে একজন স্টুডেন্টের মিনিমাম ২০০-২৫০ টাকা কম লাগবে।

মোস্তাফিজুর আরও বলেন, ২০২১ সালে আমরা যখন বিভাগীয় শহরগুলোতে পরীক্ষা নেই তখন পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের আগে থেকে যে সম্মানী প্রদান করা হতো, এতে তারা আপত্তি জানায়। ফলে শিক্ষকদের সম্মানী বাড়ানো হয়। যার প্রভাব আবেদন ফি’র ওপর গিয়ে বর্তায় এবং সামগ্রিকভাবে ভর্তির আবেদন ফি বৃদ্ধি পায়। এই দুই খাতে ব্যয় কমাতে পারলেই আবেদন ফি’র হার কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

এনবিএস/ওডে/সি