এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৮ মার্চ, ২০২৩, ০২:০৩ পিএম
পুরান ঢাকায় জবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, আহত ৫
পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের উপর সংঘবদ্ধভাবে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। এ ঘটনায় অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত এক শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎধীন।
সোমবার (২৭ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে গেন্ডারিয়ার মুরগিটোলা মোড় এলাকায় প্রথম দফায় ও ১১ টার দিকে দ্বিতীয় দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে মারামারির ঘটনা ঘটে শিক্ষার্থীদের। তখন এক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় দু’জনকে আটক করে সূত্রাপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তীতে তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে রাত ১১টার দিকে আবু সুফিয়ান ও শিহাব নামের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় মুরগিটোলা মোড়ে চা খেতে গেলে হঠাৎ স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের ৫০-৬০ জন ওই দুই শিক্ষার্থীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তাদের চিৎকারে আশেপাশে অবস্থান করা আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে তাদের উপরও আক্রমণ করে স্থানীয়রা।
গুরুতর আহত সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, চা খাওয়ার জন্য আমার বন্ধুর সঙ্গে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় কয়েকজন এসে আমাদের আটকিয়ে কোথায় থাকি জিজ্ঞাসা করে। বানিয়ানগর থাকি বলতেই আমাদের ওপর অনেকগুলো ছেলে আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টি-শার্ট পরিহিত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে গালিগালাজ করতে থাকে আর মারতে থাকে। আমরা আগের ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানতাম না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ করে বলেন, তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালেও পাশে অবস্থান করা পুলিশ চেয়ে চেয়ে দেখেছে। হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে যায়নি পুলিশ। পুলিশ এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে বলেও জানান তারা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন মিলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান করলেও তারা কার্যকর কোনো ভূমিকা পালন করেনি।
হামলার শিকার শিহাব নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের মারধর করার পর পুলিশ এসে থামায়। কিন্তু বলতে থাকে তোরা জগন্নাথের স্টুডেন্ট এখানে আসছিস কেনো? এই কথা বলেই পুলিশ আমাকে মারতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর আহতদের চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সূত্রাপুর ও গেন্ডারিয়া দুই থানার ওসির সাথেই কথা বলেছি। থানাই অভিযোগ দিলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে। আর পুলিশ যে শিক্ষার্থীদের উপর হাত তুলেছে সেই ভিডিওটিও ওসিকে দিয়েছি।
গেন্ডারিয়া থানার ওসি মো. আবু সাঈদ আল মামুন বলেন, এটা সূত্রাপুর থানা অধীনে। ঘটনার সময় সেখানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা ছিল। তারা মারামারি থামিয়ে দিয়েছে।পরে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তবে এ ঘটনায় আমাদের এখানে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।
সূত্রাপুর থানায় ওসি মো. মইনুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় ভিকটিম এখনো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। কোথা থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে তা ভিকটিম আসলে তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারবো। আর যেই দু’জনকে আটক করা হয়েছিল তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। তাই তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এনবিএস/ওডে/সি